আন্তর্জাতিক
ব্রুনেইয়ের সুলতানের সম্পদ-বিলাসবহুল জীবন নিয়ে যা জানা যায়
ব্রুনেইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসছেন শনিবার (১৫ই অক্টোবর)। এই মূহুর্তে বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সিংহাসনে থাকা শাসকদের অন্যতম তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ২০২০ সালে তার এই সফরটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে সেটি পিছিয়ে এখন হচ্ছে।
বিলাসবহুল জীবন
সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ তার বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্যও বেশ আলোচিত। এক সময় তিনি ছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী, এবং এখন তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
ছয়শো বছরের বেশি পুরনো রাজবংশের উত্তরাধিকারী সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ উত্তরাধিকার সূত্রেই বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অনেকগুলো বিলাসবহুল হোটেলের মালিক সুলতান। এছাড়াও এসব দেশে বিপুল ভূ-সম্পত্তিরও মালিকানা রয়েছে তার।
বিশাল প্রাসাদ, বিভিন্ন দেশে পাঁচ-তারা হোটেল, সোনায় মোড়ানো রোলস্রয়েস, হাজারো গাড়ির বহর, সোনার প্রলেপ দেয়া বোয়িং, মহামূল্য চিত্রকর্মের বিশাল সংগ্রহ, পোলো খেলা- হাসানাল বলকিয়াহর পরিচয়ের সাথে এসব বিষয় যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
ব্রুনেইয়ের দারুসসালামে অবস্থিত সুলতানের প্রাসাদ ইস্তানা নুরুল ইমান আকারে ভ্যাটিকান বা বাকিংহাম প্রাসাদের চাইতে অনেকগুণ বড়।
গিনেস বুক অব রেকর্ডস অনুযায়ী এটি বিশ্বের সবচাইতে বড় প্রাসাদ। এই প্রাসাদে কক্ষের সংখ্যা ১৭০০।
হাসানাল বলকিয়াহর রয়েছে এক বিশাল গাড়ির বহর। বলা হয়ে থাকে তার বহরে সাত হাজারের মত গাড়ি আছে, যার মোট মূল্য ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। তার গ্যারেজের সংখ্যা ১১০টি। বহরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাহন তার সোনায় মোড়ানো রাজকীয় রোলস্রয়েস। বিশেষ ডিজাইনের রোলস্রয়েসের ছাদ খোলা এবং পেছনে ছাতা সংযুক্ত করা।
এতে চেপে তিনি নিজে যেমন শহর পরিভ্রমণ করেন, তেমনি রাজপরিবারের সদস্যদের বিয়েশাদীর অনুষ্ঠানের পর প্রথা অনুযায়ী প্রজাদের দর্শন দিতেও ব্যবহার হয় এই গাড়ি।
এটি ছাড়াও মোট ৬০০টির মত রোলস্রয়েস গাড়ির মালিক সুলতান। ধারণা করা হত, নব্বইয়ের দশকে বিক্রি হওয়া বিশ্বের অর্ধেক রোলস্রয়েসের মালিক সুলতান এবং তার পরিবার। এছাড়া কয়েকশ’ ফেরারি গাড়ি আছে তার। এর বাইরে ল্যাম্বরগিনি, পোর্সেসহ দুর্লভ এবং লিমিটেড এডিশন গাড়িরও লোভনীয় বহর আছে সুলতানের। সুলতানের প্রাইভেট জেট বহরে আছে বোয়িং ৭৪৭-৪০০, বোয়িং ৭৪৭-২০০ এবং একটি এয়ারবাস বিমান।
বিমান বহরের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বোয়িংটি সোনার প্রলেপ দেয়া, যাকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘উড়ন্ত প্রাসাদ’ বলে অভিহিত করা হয়।
সুলতান হাসানাল বলকিয়ার রয়েছে বহুমূল্য চিত্রকর্মের বিশাল সংগ্রহ।এর মধ্যে পাবলো পিকাসো এবং পিয়ের-অগস্ত্য রেনোয়াঁর একাধিক আসল চিত্রকর্মের মালিক তিনি। এছাড়া পশ্চিমা সঙ্গীতেরও বড় ভক্ত তিনি। তার ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে এসেছিলেন ‘কিং অব পপ’ খ্যাত মাইকেল জ্যাকসন। বলা হয়ে থাকে সেই অনুষ্ঠানের জন্য মাইকেল জ্যাকসনকে সাত মিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিক দেয়া হয়েছিল।
এছাড়া সুলতান ঘোড়া পছন্দ করেন, এবং পোলো খেলতে ভালোবাসেন।
তিনি ফ্যাশনেবল পোশাক পরতে পছন্দ করেন। তার ব্যক্তিগত পরিচর্যার ব্যয়ও বিপুল। দ্য টাইমসের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, সুলতানের চুল কাটার জন্য তার নিজের মালিকানাধীন ব্রিটেনের দ্য ডরচেষ্টার হোটেলের একজন নাপিত নিয়মিত বিমানের প্রথম শ্রেণীতে চেপে উড়ে যান ব্রুনেই। বিমান ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ বাদে তার পারিশ্রমিক কুড়ি হাজার মার্কিন ডলার। এবং ওই নাপিতকে প্রতিবার নগদ অর্থে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়।
সিংহাসন আরোহন ও রাজনৈতিক ইতিহাস
১৯৬৭ সালে তার বাবা স্যার হাজি ওমর আলী সাইফুদ্দিন সিংহাসন ত্যাগ করার পর ১৯৬৮ সালের অগাস্টে হাসানাল বলকিয়াহ ব্রুনেইয়ের সুলতান হিসেবে রাজমুকুট পরিধান করেন।
সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ একই সাথে ব্রুনেইয়ের প্রধানমন্ত্রী এবং দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। এছাড়া তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন, এবং শাসক হিসেবেও শীর্ষ সম্পদশালীদের অন্যতম। সুলতানের দুইজন স্ত্রী এবং ১১ জন সন্তান।
বিশ্বজুড়ে সর্বশেষ টিকে থাকা পূর্ণাঙ্গ রাজতন্ত্রগুলোর একটি এটি। ১৯৬৮ সালে সুলতান হন হাসানাল বলকিয়াহ। তখন থেকে তার হাতেই সব নির্বাহী ক্ষমতা। তিনি একাধারে প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা এবং অর্থমন্ত্রী।
রাজতান্ত্রিক ইসলামিক শাসনে পরিচালিত দেশ ব্রুনেই একসময় ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল, ১৮৮৮ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে আসে দেশটি।
একমাত্র মালয় রাজ্য হিসেবে ১৯৬৩ সালে ব্রুনেই ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবেই থাকার সিদ্ধান্ত নেয়, এর মাধ্যমে দেশটি মালয়েশিয়ার অংশ হবার জন্য গঠন করা ফেডারেশনে যোগদানের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এরপর ১৯৭৮ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ব্রিটেনের সাথে আলোচনা শুরু করেন সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ। এরপর ১৯৮৪ সালে পূর্ণ স্বাধীনতা পায় ব্রুনেই। কিন্তু ওই বছরই সুলতান দেশটির পার্লামেন্ট বাতিল করেন। এর বিশ বছর পর ২০০৪ সালে সুলতান পার্লামেন্ট নতুন করে চালু করেন। পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন এর মাধ্যমে দেশটির জনগণকে কিছু রাজনৈতিক অধিকার দেয়া হয়।
২০১৪ সালে পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে ব্রুনেই ইসলামিক শরিয়া আইনে দেশ চালানোর ঘোষণা দেয়। দেশটির আইনে পরকীয়া প্রেমের শাস্তি পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড এবং চুরির সাজা হিসেবে হাত কেটে নেয়ার বিধান আছে।
১৯৯১ সালে তিনি দেশটিতে ‘মালয় মুসলিম মোনার্কি’ নামে নতুন এক রক্ষণশীল ভাবধারা চালু করেন, যার মাধ্যমে সম্রাটকে ধর্মের রক্ষাকারী বা রক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
এছাড়া ২০১৯ সালে দেশটিতে সমকামিতার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রেখে একটি আইন করা হয়। আইনে পুরুষে পুরুষে যৌনকর্ম এবং পরকীয়া সম্পর্কের জন্য পাথর ছুড়ে মৃত্যুর বিধান রাখা হয়েছে।
ওই আইন পাস হওয়ার পর পশ্চিমা দুনিয়ায় ব্রুনেইয়ের সুলতানের ব্যাপক সমালোচনা হয়, যাতে সামিল হয়েছিলেন স্যার এলটন জন এবং জর্জ ক্লুনির মত বিখ্যাত তারকারাও।
সেসময় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুলতানকে দেয়া সম্মানসূচক ডিগ্রী প্রত্যাহারের ডাক দিয়েছিলেন মানবাধিকার কর্মীরা। আন্দোলনের মুখে সুলতান নিজেই তার ডিগ্রী ফিরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেন। যদিও সুলতান পরে ওই আইন থেকে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করেন। কিন্তু ব্রুনেইয়ে আগে থেকেই সমকামিতা নিষিদ্ধ ছিল এবং এজন্য ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান ছিল।
ব্রুনেইতে কোনো বিরোধী দল নেই, এমনকি স্বাধীনতার পর থেকে কোনো স্বাধীন সিভিল সোসাইটি গ্রুপও গড়ে উঠেনি। সরকারের বিরোধিতা গণ্য হতে পারে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবেও, যার শাস্তি অত্যন্ত কঠিন।
১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করা হাসানাল বলকিয়াহ মালয়েশিয়া এবং ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন পাইলট।
দীর্ঘদিন ধরে দেশ শাসন করলেও প্রজাদের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়। তেল ও গ্যাসের বিপুল মজুদের কল্যাণে ছোট্ট একটি দেশ ব্রুনেইয়ের জনগণের জীবনযাত্রার মান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয়। এ দেশের মানুষকে কোন আয়কর দিতে হয় না সরকারকে। বরং বিভিন্ন সরকারি স্কিম বা কর্মসূচীর অধীনে সুলতান নিয়মিত জনগণের মধ্যে জমি এবং বাড়িঘর বিতরণ করে থাকেন। এসব কারণে ব্রুনেইয়ের জনগণের কাছে সুলতান বেশ জনপ্রিয়। সূত্র-বিবিসি
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন