আইন-বিচার
কুকুর লেলিয়ে হিমাদ্রি হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি বহাল,খালাস ২
চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে দিয়ে মেধাবী কলেজ শিক্ষার্থী হিমাদ্রী মজুমদার হিমুর চাঞ্চল্যকর হত্যার রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। হত্যার রায়ে রিয়াদ,শাওন ও ড্যানির ফাঁসি বহাল রেখেছেন আদালত। সেই সঙ্গে খালাস দেয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিচারপতি ভীস্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে আরও বলা হয়, হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দিয়েই হিমাদ্রীকে হত্যা করে আসামিরা।
এর আগে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হিমাদ্রি হত্যার দায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচজন আসামিরা হল- শাহ সেলিম টিপু ও তার ছেলে জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ এবং রিয়াদের তিন বন্ধু শাহাদাৎ হোসাইন সাজু, মাহাবুব আলী খান ড্যানি এবং জাহিদুল ইসলাম শাওন। পলাতক আছেন জুনায়েদ ও জাহিদুল।
এলাকায় মাদক ব্যবসা ও সেবনের প্রতিবাদ করায় ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল নগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের ‘ফরহাদ ম্যানশন’ নামের ১০১ নম্বর বাড়ির চারতলায় হিমুকে হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দিয়ে নিমর্মভাবে নির্যাতন করে সেখান থেকে ফেলে দেয় অভিজাত পরিবারের কয়েকজন বখাটে যুবক।
গুরুতর আহত হিমু ২৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ২৩ মে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। হিমু পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের ইংরেজি মাধ্যমের সামারফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘এ’ লেভেলের শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় হিমুর মামা প্রকাশ দাশ অসিত বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। আসামিরা হলেন, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শাহ সেলিম টিপু, তার ছেলে জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ এবং রিয়াদের তিন বন্ধু শাহাদাৎ হোসাইন সাজু, মাহাবুব আলী খান ড্যানি এবং জাহিদুল ইসলাম শাওন।
২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানা পুলিশ ওই মামলায় এজাহারভুক্ত পাঁচজন আসামিকে অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১৮ অক্টোবর পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এরপর অভিযোগ গঠনের জন্য আদালত সময় নির্ধারণ করলেও চারবার তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ এসএম মজিবুর রহমান এ মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু মামলায় ছয় জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেয়ার পর ২০১৪ সালের ২১ জুলাই এক আসামির করা আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলায় ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও জাফর আহমদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। ওই স্থগিতাদেশের অনুলিপি ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম আদালতে পৌঁছালে মামলাটির বিচার কাজ থেমে যায়।
এরপর ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট উচ্চ আদালতের একই বেঞ্চ তাদের দেয়া ছয় মাসের ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে করে। সেই আদেশের অনুলিপি ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম আদালতে এসে পৌঁছায়।
এরপর ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক রেজা তারিক আহমেদের আদালতে আবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে বিচার শেষ না হওয়ায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের আগে ২০১৫ সালের ১৯ মার্চ মামলাটি চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর হয়ে যায়। ওই আদালতে বিচারক পদ ছিল শূণ্য। পাঁচ মাস পর ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট ওই আদালতে নতুন বিচারক যোগ দেন। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর হিমু হত্যা মামলায় যুক্তি উপস্থাপন শুরু করে রাষ্ট্রপক্ষ।
পাঁচটি নির্ধারিত দিনে যুক্তি উপস্থাপন করে ২০১৫ সালের ১৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়।
এরপর ১ নভেম্বর আসামি শাহ সেলিম টিপুর আইনজীবী যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। সর্বশেষ গত ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ৩২ কার্যদিবস যুক্তি উপস্থাপন করেন মামলার পাঁচ আসামির আইনজীবী। ১৬ জুলাই মামলার রায় ঘোষণা করতে ২৮ জুলাই সময় নির্ধারণ করেন আদালত।
কিন্তু ওইদিন বিচারক ছুটিতে থাকায় রায় ঘোষণা করা হয়নি। এরপর ১১ আগস্ট রায় ঘোষণার দ্বিতীয় দিন ধার্য করা হয়। ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম আদালতে ‘ফুল কোর্ট রেফারেন্স’ থাকায় রায় ঘোষণা করা হয়নি। এরপর ১৪ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের প্রথম প্রাণী আসামি
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন