জাতীয়
জেল হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হওয়া উচিত
তিন নভেম্বর জেলখানায় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সম্পূর্ণ তদন্ত হওয়া উচিত। এমন মন্তব্য করেছেন সেই হত্যাকান্ডে নিহত চার জাতীয় নেতাদের পরিবারের সদস্যরা।
পুরাতন ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত শেষে এ মন্তব্য করেন তারা। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকালে এই আয়োজন করা হয়।
সেখানে জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথেই জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন করেন। তারা বিচক্ষণ ও দূরদর্শিতার সঙ্গে সরকার পরিচালনা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাত্র আড়াই মাসের মাথায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। অবশ্যই এই দুই হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। এই হত্যার সম্পূর্ণ তদন্ত হওয়া উচিত। কারণ ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর মিলিটারি শাসক জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। যার মাধ্যমে বিচারের সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে বিচার শুরু হলেও ২০০১ সালে এই বিচারে প্রক্রিয়া প্রভাবিত করে ২০০৪ সালের অক্টোবর মাসে প্রহসনমূলক একটা রায় দেয়া হয়।
সোহেল তাজ বলেন, পরে ২০০৮ সালে আবারও সেই মামলার এভিডেন্স, তথ্য ও সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্নভাবে তথ্য-প্রমাণ গায়েব করা হয়। যার কারণে ২০১৪ সালে আপিল বিভাগ বাধ্য হয় নিম্ন আদালতে রায় বহাল রাখতে। এক অর্থে আমরা জেল হত্যাকাণ্ডের বিচার এখন হয়নি। বিচার পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা। একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে নতুন প্রজন্মের কাছে জেল হত্যার প্রকৃত রহস্য পরিবেশন করতে হবে। যেন মানুষের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি হয়। যাতে করে ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বরের মতো হত্যাকাণ্ড যেন আর না ঘটে।
সোহেল তাজ বলেন, ‘আমাদের সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে বের করে নিয়ে আসা উচিত। হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা ছিল, কীভাবে কি হয়েছে। আমি মনে করি, সবকিছু জানার অধিকার আছে। সম্পূর্ণ তদন্ত করে বের করতে হবে। সত্য কিন্তু তেতো হয়৷ কিন্তু সবকিছু আনতে হবে। সব সত্যকে বের করে আনতে হবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয়, তদন্ত কমিটি হতে হবে গ্রহণযোগ্য। এমন মানুষ দিয়ে তদন্ত করতে হবে, যিনি সার্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য। এখানে যেন কোনো সন্দেহের অবকাশ না থাকে। এটা জাতির জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ‘।
আরেক জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন এম মুনসুর আলির নাতি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের ছেলে রাজ বলেন, জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের আসামিরা বিদেশে পলাতক রয়েছে। ওই ১০ খুনিকে ফেরত আনতে হবে। বিশ্বের বড় বড় যে দেশগুলো যারা মানবতার কথা বলে, তাদের দেশে খুনিরা লুকিয়ে আছে। অবিলম্বে খুনীদের ফেরত পাঠাতে জাতীয় চার নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি আহবান জানান তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করার তাগিদ দেন তিনি।
নিহত জাতীয় নেতা এ এইচ এম কামরুজ্জামানের ছোট ছেলে এহসানুজ্জামান স্বপন বলেন, এই বিচার পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়েছে। ১৯৯৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় গেলে বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই বিচার ২০১৫ সালে শেষ হয়। তাঁর মা দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি এই বিচারের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি রায় শুনে গেছেন। তবে রায় বাস্তবায়ন দেখে যাননি।
জেল হত্যাকান্ডের তদন্ত কমিশন গঠন করার গুরুত্ব তুলে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের অনেক তথ্য প্রমাণ নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই সাজা পেয়েছে। কিন্তু যারা নেপথ্যে ছিলো তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়নি।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন