অন্যান্য
যৌন হয়রানির অভিযোগ কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করাসহ যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তিনি নারী শিক্ষার্থীদের মেসেঞ্জার, সরাসরি এবং ফোনে কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব, হুমকি দেওয়াসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন বলে ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল’এর নিকট ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আল-আমিন।
আজ শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের সদস্য সচিব ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন রেজোয়ানা অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, আল-আমিন দীর্ঘদিন ধরে লোক প্রশাসন বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ, আইন বিভাগ এবং গণিত বিভাগের বেশ কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীকে নিয়মিত হয়রানি, কুপ্রস্তাব এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে আসছে। নারী শিক্ষার্থীরা কথা বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলে তাদের সাথে অশালীন আচরণ করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দসহ কুরুচিপূর্ণভাবে সম্বোধন করেন৷ মেসেঞ্জারে ব্লক করলে সামনাসামনি কিংবা ফোন নাম্বারে কল দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন এবং বিভিন্ন সময় হুমকি প্রদান করেন৷ এছাড়াও গবেষণাসহ নানানরকম সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে মেসেঞ্জারে নানা কুরুচিপূর্ণ অশালীন কথাবার্তা, প্রেম, বিয়ে এবং বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দেন। সর্বশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল’ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় একজন শিক্ষার্থী।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘তিনি আমার ব্যক্তিগত মেসেঞ্জারে তার ‘Alamin Kotwal’ নামক আইডি থেকে গবেষণাসহ নানারকম সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে নানা কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলেন এবং কুপ্রস্তাব দেন। আমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করার পাশাপাশি হুমকি-ধামকি দেন। এছাড়াও তিনি আমার কাছে বিভিন্ন মেয়ের আইডি চাইতেন। নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে বারবার দেখা করতে বলতেন। এরপর আমি তাঁর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে অভিযোগ করি।’
ভুক্তভোগী অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গবেষণা নিয়ে কথা বলবে বলে তিনি আমাকে গভীর রাতে ফোন দিতো। কিন্তু গবেষণা সম্পর্কিত কথা না বলে উনি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়৷ আমি রাজী না হলে আমাকে নানাভাবে হয়রানি এবং বিরক্ত করা শুরু করেন। আমি ব্লক করে দিলে আমার নাম্বারে ফোন দিয়ে বিভিন্ন অশালীন কথাবার্তা বলে হয়রানি করে। এছাড়াও ক্যাম্পাসে গেলে সামনাসামনি আমাকে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।’
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাকে তিনি বহুদিন ধরে নানারকম কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। তার বিরক্ত সহ্য করতে না পেরে আমি অভিযোগ করবো বললে তিনি আমাকে এখানে থাকতে দেবেন না এবং আমার সম্মান নষ্ট করে দিবে বলে হুমকি দেন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘এসব মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি ষড়যন্ত্র এবং প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে আমার ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চাচ্ছে৷’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের সদস্য সচিব ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন রেজোয়ানা বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ স্বীকার করেননি আল আমিন। কিছু বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে এবং সে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে জড়িত থাকবে না বলে মুচলেকা দিয়েছে। আমরা তাঁকে মৌখিক সতর্কতা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।’
অন্যান্য
ফের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাবির শিক্ষার্থীরা
কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ চার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়।
এর আগেও শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে গেলো ১, ২, ৩ ও ৪ জুলাই টানা চার দিন যথাক্রমে ১০ মিনিট, ২০ মিনিট, ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ও ৩৫ মিনিট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
টিআর/
অন্যান্য
কোটা বাতিলের দাবিতে আজ শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি
কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আজ সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবেন কোটা পদ্ধতি বাতিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে সারা দেশে কয়েক দিন ধরে টানা আন্দোলন করছেন তারা।
রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টায় দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় শাহবাগ মোড়ে অবরোধ শেষে এ ঘোষণা দেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। যদি বাধ্য করা হয়, আমরা প্রয়োজনে সারা দেশে হরতালের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। আজকের ছাত্রসমাজকে আদালতের মুখোমুখি করা হচ্ছে, এ দায় নির্বাহী বিভাগ এড়াতে পারে না।
এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও সায়েন্স লাইব্রেরি খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যদি না খোলেন তাহলে আমরা নিজ দায়িত্বে খুলে নিতে বাধ্য হবো।
জেএইচ
অন্যান্য
৪র্থ দিনের মতো চলছে কোটা বিরোধী আন্দোলন, শাহবাগ অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহালসহ চার দফার দাবিতে চতুর্থদিনের মতো শাহবাগ মোড়ে অবস্থান গ্রহণ করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় আশেপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শাহবাগ অচল হয়ে পড়ে।
শনিবার (৪ জুলাই) বেলা আড়াইটা থেকে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা নিজস্ব হলের ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখান থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে হলপাড়া-ভিসি চত্বর-টিএসসি-বুয়েট, ইডেন কলেজ হয়ে বেলা পৌনে ৫টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। আজকের বিক্ষোভে সর্বোচ্চ উপস্থিতি হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকেও শিক্ষার্থীরা যোগদান করেন।
এর আগে গতকাল (শুক্রবার) ৩ দিন ব্যাপী ঘোষিত কর্মসূচির শুক্রবার ১ম দিনের কর্মসূচিতে অনলাইন ও অফলাইনে জনসংযোগ করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় ৭০টিরও অধিক বিভাগ ও ইন্সটিটিউট। ফলে আজ বিভিন্ন বিভাগ থেকেও পৃথক পৃথক ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা।
সরজমিনে শিক্ষার্থীদের শাহবাগ মোড়ে বসে স্লোগান দিতে দেখা যায়। ফলে ফার্মগেট-শাহবাগ, শাহবাগ-পল্টন-মগবাজার রোড, শাহবাগ -সাইন্সল্যাব রোড এবং শাহবাগ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় সাধারণ জনগণ গাড়ি ছেড়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে থাকেন। তবে এম্বুলেন্সের নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য শিক্ষার্থীরা জায়গা করে দেয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার”, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, “কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন৷
আরও পড়ুন: যবিপ্রবিতে ৭ দিন ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা কোটা আন্দোলনকারীদের
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থীদের অবরোধে শাহবাগের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা নিজেদের অবস্থান গ্রহণ করেছি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের উপর নির্ভর করবে কতক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচির আলোকে আজকে বিক্ষোভ মিছিল করেছি। আগামীকাল আমাদের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি শেষ হবে। আজ শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিরভপর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ৪ দফা দাবিতে দেশব্যাপী লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্রসমাজ। ৪ দফা দাবিগুলো হলো-
১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২। ১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ছাড়া);
৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।
৪। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন