ফুটবল
ফুটবলারদের সঙ্গিনীরা থাকবেন ১০ হাজার কোটির প্রমোদতরীতে!
ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের স্ত্রী-বান্ধবীদের থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিলাসবহুল প্রমোদতরী। ৯৭০৫ কোটি টাকার প্রমোদতরী দোহার বন্দরে ভেড়ার আগেই তৈরি হয়েছে বিরাট বিতর্ক।
দামের দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা হলেও এই প্রমোদতরীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শ্রমিকদের ঘাম-রক্ত। জানা গেছে, সেই প্রমোদতরী তৈরি করতে যে সব শ্রমিকরা পরিশ্রম করেছেন, তাদের সঙ্গে ক্রীতদাসদের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি, কম বেতনে দিনের পর দিন খাটতে হয়েছে।
স্পেনের একটি মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, কিউবার প্রায় হাজার খানেক শ্রমিকের সঙ্গে অত্যাচার করা হয়েছে। তাদের থাকতে হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করতে হয়েছে। কেড়ে নেয়া হয় পাসপোর্টও।
শুধু কম বেতনই নয়, পুরো বেতনের টাকাও মেটানো হয়নি। জানা গেছে, মাসে হাজার দশেক টাকাও বেতন ছিল না ওই শ্রমিকদের। অনেকেই একে মধ্যযুগীর ক্রীতদাস প্রথার সঙ্গে তুলনা করছেন।
প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা কাতারে পৌঁছে গেছেন। তাদের স্ত্রী-বান্ধবীরাও ধীরে ধীরে এসে পৌঁছবেন। তবে ফুটবলারদের সঙ্গে তারা থাকবেন না। ইংরেজ ফুটবলারদের স্ত্রী-বান্ধবীদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে বিলাসবহুল প্রমোদতরীতে।
কাতারের রাজধানী দোহার সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সেই প্রমোদতরী থাকবে। সেখানে আধুনিক যা ব্যবস্থা রয়েছে, তা হতবাক করার জন্যে যথেষ্ট।
জানা গেছে, সেই ক্রুজে শপিং মল, সালঁ, স্পা-র মতো বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়া যাবে। আমোদ-প্রমোদ এবং বিনোদনের আরও হাজার রকম উপাদান থাকছে সেই ক্রুজে।
এটি বিশ্বের অন্যতম দামি প্রমোদতরী। একটি রাতের জন্য খরচ হতে পারে ২,৪৩৪ পাউন্ড। ফলে ধনী ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ এখানে থাকতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে না।
২০১৬ থেকে এই প্রমোদতরী বানানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়। ইটালির সংস্থা এমএসসি ক্রুজেস এটি তৈরি করেছে। মোট চারটি প্রমোদতরী তৈরি করা হয়েছে ৪০০ কোটি ইউরোয়
সুয়েজ খাল থেকে ইতিমধ্যেই এই প্রমোদতরী কাতারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। ইংল্যান্ডের ২৬ জন ফুটবলারের বেশির ভাগেরই স্ত্রী-বান্ধবীরা ওই প্রমোদতরীতে থাকবেন।
এ বার জেনে নেয়া যাক কী কী থাকবে সেই প্রমোদতরীতে। সূত্রের খবর, একাধিক সাঁল, বুটিক, বাচ্চাদের গাড়ি নিয়ে খেলার জায়গা ছাড়াও ছ’টি সুইমিং পুল, ১৪টি সমুদ্রমুখী জাকুজ়ি এবং একটি ড্রাই-স্লাইড থাকবে।
প্রমোদতরীর স্পোর্টসপ্লেক্স এলাকায় বাস্কেটবল, বাম্পার কার, রোলার ডিস্কো রিঙ্ক থাকছে। ফলে মজা করার কোনও উপাদানই বাকি রাখা হচ্ছে না।
১৩টি রেস্তোরাঁ এবং পানশালা ছাড়াও প্রমোদতরীতে মাইক্রো-ব্রিউয়ারি থাকছে। বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তের বিভিন্ন মদ পাওয়া যাবে।
এই প্রমোদতরী লম্বায় ১০৯৪ ফুট, উচ্চতা ২২৩ ফুট এবং প্রস্থে ১৫৪ ফুট। এর গতি ২২.৭ নট। মোট ৬,৭৬২ জন যাত্রী থাকতে পারবেন। তাদের জন্য কর্মী থাকবেন ২,১৩৮ জন। প্রমোদতরীর ২১টি ডেক রয়েছে।
কাতারের বাকি জায়গায় মদ্যপান নিয়ে প্রচুর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই প্রমোদতরী যেহেতু জলভাগে থাকবে, তাই মদ্যপান করতে কোনও অসুবিধা নেই।
ফুটবলারদের স্ত্রী-বান্ধবীদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ দেয়া হচ্ছে। বিলাসে থাকার জন্যে তাতেও অবশ্য প্রচুর গাঁটের কড়ি খসাতে হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, এরিক ডায়ারের বান্ধবী তথা মডেল আনা মডলার সেখানে থাকবেন।
কলকাতায় অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলে যাওয়া ফুটবলার ফিল ফডেনের বান্ধবী রেবেকা কুক এই প্রমোদতরীতে থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
প্রমোদতরীর সঙ্গে যুক্ত এক কর্মী বলেন, “এই প্রমোদতরীতে থাকা অসাধারণ ব্যাপার। বিশ্বকাপ দেখতে এলে এর থেকে ভাল জায়গা আর হয় না। মদ্যপানেও কোনও অসুবিধা নেই। দোহার অনেক হোটেলে রৌদ্রস্নান করা যাবে না। এখানে সেই সুবিধাও রয়েছে।”
তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হল, ফুটবলাররা নিজেরাই হয়তো স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। আল ওয়াকরার হোটেলে কড়া কোভিডবিধির মধ্যে থাকবেন তারা। অন্য দিকে, স্ত্রী-বান্ধবীরা কোভিডবিধির বাইরে থাকবেন।
কাতারে আরও অনেক কড়া নিয়ম রয়েছে। যেমন, প্রকাশ্যে থুতু ফেলা যাবে না। ৬০০০ পাউন্ড (৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা) জরিমানা হতে পারে। সরকারি বাড়ির আশেপাশে নিজস্বী তোলা যাবে না।
ইংল্যান্ড সরকারের তরফেও বলে দেয়া হয়েছে, কাতার যে নিজের দেশের মতো নয়, এটা বুঝতে হবে। তাই নিয়মবিরুদ্ধ কাজ করা চলবে না।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন