রাজশাহী
করোনায় রামাকে হাসপাতালে ৭২ জনের মৃত্যু
গত এক সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বাকিরা মারা গেছেন নমুনা পরীক্ষার আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। তবে উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার পর নমুনা পরীক্ষায় অধিকাংশের রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রামেক সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহে ৭২ জনের মধ্যে ৫৯ জনই করোনার হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। ওই ৫৯ জনের মধ্যে ৩৬ জনই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা এবং বাকি ২৩ জন রাজশাহীর।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, গত এক সপ্তাহে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ৮ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৭২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে ১ জুন সাতজন, ২ জুন সাতজন, ৩ জুন নয়জন, ৪ জুন ১৬ জন (সর্বোচ্চ), ৫ জুন ৮ জন, ৬ জুন ছয়জন, ৭ জুন ১১ জন এবং সর্বশেষ ৮ জুন আটজন মারা গেছেন।
করোনায় এক সপ্তাহের তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক সপ্তাহে মারা যাওয়া ৭২ জনের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৬ জন এবং রাজশাহীর ২৩ জন। সে হিসাবে রামেকে মৃত্যুর হার করোনার হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং রাজশাহীর ৩২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোগীদের অধিকাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। এজন্য সেখানকার রোগীর মৃত্যু হার বেশি বলে জানান ডা. সাইফুল ফেরদৌস।
এদিকে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর মারা যান। মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দু’জনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবং একজন রাজশাহীর। বাকিরা মারা গেছেন নমুনা পরীক্ষার আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রাজশাহীর তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন এবং পাবনার একজন রয়েছেন।
সোমবার (৭ জুন) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (৮ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তারা মারা গেছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে দুইজন, ৩ নং ওয়ার্ডে দুইজন এবং ১৬, ২২, ২৫ ও ২৯ নং ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন। রাজশাহীর ১৬ জন, চাঁপাইয়ের ১৪ জন, নওগাঁর একজন এবং নাটোরের দুইজন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৫৭ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১২৭ জন, চাঁপাইয়ের ১০২ জন, নওগাঁর নয়জন, নাটোরের ১১ জন, পাবনার চারজন, কুষ্টিয়ার তিনজন এবং জয়পুরহাটের একজন। আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ১৭ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৫৭ জনের মধ্যে ১২৫ জনের করোনা পজিটিভ রয়েছে। বাকিদের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, রাজশাহীতে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়েছে। সোমবার রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে রাজশাহীর ৩৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৭৪ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দুটি পিসিআর ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এতে দেখা যায়, আগের দিনের চেয়ে তিন দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে করোনা শনাক্তের হার হয়েছে ৪৫ দশমিক ০৭ শতাংশ। যা এর আগের দিন রোববার ছিল ৪১ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগের দিন শনিবার ছিল ৫০ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং গত শুক্রবার এ জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৪৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
রামেক হাসপাতাল ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুই ল্যাবে তিন জেলার ৫৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৮০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৭৪ জনের পজিটিভ এসেছে।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০৫ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে এ জেলার নমুনা পরীক্ষা হয়। ফলাফল অনুযায়ী এ জেলায় শনাক্তের হার ৬০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এর আগে গত শনিবার এ জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৬১ দশমিক ৩৬ এবং গত শুক্রবার ছিল ৬১ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
এছাড়াও নওগাঁ জেলার একজনের নমুনা পরীক্ষা করে তার করোনা পজিটিভ এসেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) পিসিআর ল্যাবে এ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ রোধে অব্যাহত রয়েছে অনির্দিষ্টকালের বিধিনিষেধ। সোমবার থেকে দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে বিকেল ৫টার পর দোকানপাটসহ সব বন্ধ রাখা হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসনের ছয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুলিশের পাশাপাশি মাঠে কাজ করছে রাজনৈতিক দলের নেতারাও। এছাড়াও শর্তসাপেক্ষে লকডাউন শিথিল করে কঠোর বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
রাজশাহী
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সকল প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান ও জানান। যাতে কোন অপশক্তি আবারও দেশটাকে অস্থিতিশীল তৈরি করতে না পারে তারও আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, এডওয়ার্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, বাংলা বিভাগের শিক্ষক মাহবুব, এডওয়ার্ড কলেজের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বরকাতুল্লাহ ফাহাদ,স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সিরাজুল মনিরা,রাব্বি রুহান ও এম এইচ অনিক।
এএম/
অপরাধ
এনায়েতপুর থানায় হামলা, ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত
সিরাগঞ্জের এনায়েতপুরে থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) পুলিশ সদর দপ্তর এবং রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষে বিভিন্ন জেলায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন সহস্রাধিক।
এর মধ্যে নরসিংদীতে ৬ জন, রংপুরে ৫ জন, ফেনীতে ৫ জন, ঢাকায় ৪ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, বগুড়ায় ৩ জন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, ভোলায় ৩ জন, লক্ষ্মীপুরে ৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ২ জন, সিলেটে ২ জন, ঢাকার আশুলিয়ায় একজন, বরিশালে একজন, জয়পুরহাটে একজন ও কুমিল্লায় একজন মারা গেছেন।
দেশজুড়ে
রাজশাহীতে থানা ও ভূমি অফিসে হামলা-অগ্নিসংযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চলমান অসহযোগ কর্মসূচিতে রাজশাহী নগরীর মোহনপুর থানা, আওয়ামী লীগের অফিস, ভূমি অফিস ও একটি মার্কেটে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তেমন কোনো অপ্রিতিকর ঘটনা না থাকলেও জেলার মোহনপুরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আজ রোববার রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোহনপুর উপজেলা সদরে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে মোহরপুর পুরো উপজেলা নিয়ন্ত্রণ নেন। এসময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে ওই এলাকায় চরম আতঙ্ক দেখা যায়। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মোহনপুর থানায় হামলা করার পর পাশেই উপজেলা ভুমি অফিসে হামলা চালায়। এসময় সহকারী কমিশনারের (ভুমি) গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এছাড়াও ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় থানার সামনের মার্কেটেও। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
আই/এ