চট্টগ্রাম
ভ্যাটের হাজার কোটি টাকা মিলেমিশে লোপাট : হাইকোর্টের রুল
কক্সবাজার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট এবং হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা ভ্যাটের হাজার কোটি টাকা মিলেমিশে লোপাট করার অভিযোগে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার (২১ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইসরাত জাহান স্বান্তনা ও অ্যাডভোকেট মো. শামসুদ্দোহা। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
গেলো ১৬ নভেম্বর ভ্যাটের হাজার কোটি টাকা মিলেমিশে লোপাট শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, কক্সবাজার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট এবং হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহক থেকে আদায় করা ভ্যাটের হাজার কোটি টাকা মিলেমিশে লোপাট করার অভিযোগ উঠেছে। হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো মাসিক চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাট কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নামমাত্র ভ্যাট দিয়ে যাচ্ছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কক্সবাজারে অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট ভ্যাট পরিশোধ করছে না। বেশিরভাগ হোটেলে অতিথিদের এন্ট্রি রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করে না। রুম ভাড়ার তালিকা রাখে না। এছাড়া রেস্টুরেন্টগুলো ভ্যাট ফরমও ব্যবহার করে না। তারা ভ্যাট কর্মকর্তাদের মাসিক রেটে নির্দিষ্ট ভ্যাট পরিশোধ করে থাকে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কর্মকর্তা হোটেল-রেস্টুরেন্ট থেকে মাসিক অবৈধ সুবিধা নিয়ে থাকেন। ভ্যাট ফাঁকি দিতে রাজস্ব কর্মকর্তাদের পরামর্শে বিক্রির একাধিক রেজিস্ট্রার রাখা হয়। একটি ভ্যাট অফিসের জন্য, অন্যটি মালিকপক্ষের জন্য। এতে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে।
এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করতে গিয়ে পিলে চমকানো তথ্য পাওয়া গেছে। প্রায় অর্ধশতাধিক হোটেল মালিক ও সংশ্লিষ্টরা স্বীকার করেছেন যে, ভ্যাটের চেয়ে তাদের দ্বিগুণ ঘুষ দিতে হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের। এর বিনিময়ে দুই থেকে তিনগুণ ভ্যাটের দায়মুক্তি পাচ্ছেন তারা এবং ভ্যাট আদায়ের চেয়ে ঘুষ আদায়ে তৎপর থাকার অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
কক্সাজারের পর্যটন শহরের তৃতীয় সারির একটি হোটেল আগস্টে প্রায় লাখ টাকার কাছাকাছি ভ্যাট দিয়েছে। তার বিপরীতে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়েছে দেড় লাখ টাকার বেশি। এরপরও হোটেলটির ২ লাখ টাকার বেশি সাশ্রয় হয়েছে। হোটেলটির হিসাবরক্ষকের তথ্যমতে, প্রতিবছর ৮ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ভ্যাট দেন তারা। তবে এর বিপরীতে ঘুষ দিতে হয় ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত। এরপরও তাদের সাশ্রয় হয় দ্বিগুণ টাকা। অর্থাৎ ৩০ লাখ টাকারও বেশি হোটেলটি ভ্যাটের টাকা লোপাটের সুযোগ পাচ্ছে। হোটেল ম্যানেজারের দাবি, শুধু এই একটি হোটেল নয়। কক্সবাজার পর্যটন শহরের ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল, কটেজ ছাড়াও রেস্টুরেন্ট, স্বর্ণের দোকান ও বিপণিবিতানগুলোও একই পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায় করে আসছে।
অভিযোগ আছে, শালিক রেস্টুরেন্টে প্রতিমাসে বিক্রি হয় দুই কোটি টাকা। সরকারের নির্ধারিত ১০ শতাংশ ভ্যাট দিলে দিতে হবে সাড়ে ২০ লাখ টাকা। অথচ কাস্টমস কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে মাসে মাত্র ১ থেকে দেড় লাখ টাকা ভ্যাট দেন তারা। আল গণি হোটেলের থানার সামনে এবং থানা রাস্তার মাথায় দুটি শাখায় প্রতিমাসে বিক্রি হয় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তারা সাড়ে ২৬ লাখ টাকা ভ্যাটের পরিবর্তে দেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা।
এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সোমবার সকালে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট ইসরাত জাহান স্বান্তনা ও অ্যাডভোকেট মো. শামসুদ্দোহা।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন