বাংলাদেশ
১১ বছর নিজ ঘরে লুকিয়ে রেখেছিলেন প্রেমিকাকে!
১১ বছর ধরে রীতিমত সংসার করছিলেন আইলুর রহমান (৩৪) আর সাজিতা (২৮)। কিন্তু একই বাড়িতে বসবাস করলেও অন্য বাসিন্দারা ঘুণাক্ষণেও টের পাননি আইলুর-সাজিতার সংসার জীবনের কথা। কারণ সাজিতাকে নিজের ঘরে লুকিয়ে রেখেছিলেন আইলুর।
ভারতের কেরালায় পালাক্কাড় শহরের কাছে একটি গ্রামের যুগান্তকারী এ প্রেম কাহিনীর সূত্রপাত বলে দ্য হিন্দু বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,মা-বাবা, ভাইবোনের সঙ্গে যে বাড়িতে থাকতেন আলিয়ুর, সে বাড়িতেই নিজের ঘরে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা প্রেমিকা সাজিতাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
ঘরটি সব সময় বন্ধ থাকতো। আইলুর ঘরে থাকলে ভেতর থেকে, আর বাইরে গেলে তালা দিয়ে দরজা বন্ধ রাখতেন।
এভাবে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় স্বেচ্ছায় সেখানে থেকেছেন সাজিতা। হাতমুখ ধুতে রাতের বেলা সবার অলক্ষ্যে এক বার ঘর থেকে তিনি বের হতেন, আবার ঢুকেও যেতেন।
নিনমারা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইলুর আর সাজিতার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একে অপরকে ভালোবেসে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু সবাইকে জানিয়ে বিয়ে করতে গেলে পরিবারের বাধার মুখে পড়বেন কাউকে না জানিয়েই একসাথে থাকতে শুরু করেন তারা।
২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মা-বাবার ঘর ছাড়েন সাজিতা। পালিয়ে আশ্রয় নেন আইলুরের ঘরে। আইলুরের মা-বাবাও টের পাননি কিছু।
সে সময় থানায় মেয়ে নিখোঁজ বলে সাজিতার মা-বাবা ডায়েরি করলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল আইলুরকে। কিন্তু আইলুর কিছু স্বীকার করেননি। পুলিশের অনুসন্ধানেও কিছু বের হয়নি। দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় মেয়েকে ভুলতেই বসেছিলেন সাজিতার মা-বাবা।
এভাবেই বদ্ধ ঘরে প্রায় এক যুগ পার হয়ে যায় সাজিতার। ওই ঘরেই তাকে খাবার এনে দিতেন আইলুর। এভাবে সবার অগোচরে তাদের সংসার জীবন কাটছিল।
তবে ঘটনার মোড় ঘুরে যায় তিন মাস আগে।
চলতি বছরের ৩ মার্চ আইলুর নিখোঁজ বলে তার মা-বাবা থানায় ডায়েরি করেন। তিন মাসেও তারা সন্ধান পাননি ছেলের।
মঙ্গলবার আইলুরকে রাস্তায় তার ভাই দেখে ফেললে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তখনই চাঞ্চল্যকর মোড় নেয় পুরো ঘটনা।
দুই ভাইয়ের ঝগড়ার সময় হস্তক্ষেপ করে কাছেই টহলরত পুলিশ। ঘটনার বর্ণনা শুনে আইলুরকে থানায় নেওয়া হয়। ডেকে পাঠানো হয় সাজিতাকেও।
জানা যায়, প্রেমিকাকে ১১ বছর এক ঘরে লুকিয়ে রাখতে রাখতে হতাশ আইলুর স্বস্তিতে বাঁচতেই তিন মাস আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে ঘর ছাড়েন। সঙ্গে নিয়েছিলেন সাজিতাকে।
সবার অলক্ষ্যে যখন সংসার সাজিয়ে বসেছেন, তখনই ভাই দেখে ফেলায় বাঁধে বিপত্তি।
আদালতে দাঁড়িয়ে এই যুগল জানান, বর্তমানে ভিথুনাসারি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তারা।
একে অপরকে ভালোবেসে স্বেচ্ছায় এক সঙ্গে থাকছেন বলে আদালতকে জানানোর পর বাড়িতে ফিরতে দেওয়া হয়েছে তাদের।
নিনমারা থানার উপ-পরিদর্শক কে নুফাল বলেন,আইলুর-সাজিতার এ ঘটনা তাদের মা-বাবা বিশ্বাসই করতে পারছেন না। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে আমরা তাদের বাড়িতে গিয়েছি, তল্লাশি চালিয়েছি, আলাদা করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। দুজনই একই গল্প বলেছে।
আইলুর জানিয়েছেন যে তিন মাস পর তিনি এই বাড়ি থেকে চলে যাবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু টাকার অভাবে তা ঘটেনি।
ইচ্ছে করে নিখোঁজ হওয়ার আগে মা-বাবার কাছে পুরো বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পাগলের মতো আচরণ করতে আইলুর। মা-বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করতেন যে তার কিছু ভালো লাগে না, তিনি হতাশ।
তিনি পছন্দ করতেন না বলে বাড়ির কেউ তার ঘরের আশপাশে যেতো না। পরিবার হওয়ায় আইলুরের মা-বাবাসহ সব সদস্যই প্রতিদিন কাজের জন্য বের হতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কিন্তু আইলুর নিজে নিয়মিত কাজ করতেন না। রংমিস্ত্রী বা বিদ্যুৎমিস্ত্রী হিসেবে কাজ পেলে মাঝে মাঝে বের হতেন তিনি। বাকি সময় নিজের ঘরেই থাকতেন।
আর সাজিতার মা-বাবা ধরেই নিয়েছিলেন যে তাদের মেয়ে মারা গেছেন।
এদিকে এই যুগলের খোঁজ পাওয়ার পর দুটি নিখোঁজ মামলারই সমাপ্তি ঘোষণা করেছে পুলিশ। বর্তমানে স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছেন তারা।
এসএন
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ