আন্তর্জাতিক
বেঁধে দেয়া তেলের দাম ‘মানবে না’ রাশিয়া
পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া তেলের দাম না মানার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। কীভাবে এর জবাব দেয়া যায় সেই উপায় খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। এর আগে রাশিয়া থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার বেঁধে দেয় জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলো।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকেই দেশটির বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নেয় পশ্চিমা বিশ্ব। রাশিয়াকে বিশ্ব অথর্নীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করতে দেশটির প্রধান রপ্তানি পণ্য জ্বালানি তেল ক্রয়ের ওপর দেয়া হয় কঠোর নিষেধাজ্ঞা। তেল বিক্রি করে পুতিন যেন ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয় মেটাতে না পারেন, সে লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নেয় পশ্চিমা দেশগুলো।
তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্ববাজারে টিকে থাকে রাশিয়া। দাম কমিয়ে চীন ও ভারতসহ অনেক দেশের কাছেই তেল বিক্রি করে দেশটি। অন্যান্য দেশও নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেয়ার আহ্বান জানায়।
দীর্ঘ তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে সেই আহ্বানে সাড়া মিলেছে। রাশিয়ার সমুদ্রপথে রফতানি হওয়া জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার বেঁধে দেয়া হয়েছে। কম দামে রাশিয়ার তেল কেনার মূল প্রস্তাব শীর্ষ সাত অর্থনীতির জোট জি-৭-এর। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়াও এ সিদ্ধান্তে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এখন থেকে পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া দামের সঙ্গে একমত দেশগুলোকে সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল কেনার ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার বা এর কম দাম পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে যেসব দেশ এ প্রস্তাব মানবে না, সেসব দেশে রুশ তেল সরবরাহকারী জাহাজগুলোকে বিমা সুবিধা দেবে না ইউক্রেনের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এ পদক্ষেপের ফলে রাশিয়ার আয় কমে যাবে। ফলে অচিরেই বড় ধাক্কা খাবে পুতিন প্রশাসন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে এ প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান নিয়ে গঠিত জোট জি-৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আর জি-৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়ার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেল বিক্রির আয় দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন পুতিন। সেই পথ এবার অনেকটা বন্ধ হবে। তবে পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া তেলের দাম রাশিয়া ‘মানবে না’ বলে জানিয়ে দিয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, পশ্চিমাদের কীভাবে এর জবাব দেয়া যায় সেই উপায় খোঁজা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ইউক্রেনের দখলকৃত দনবাস অঞ্চলে সফরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে কখন দনবাসে সফরে যাবেন বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় সম্মত হলে, রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগ কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা বিবেচনা করা উচিত পশ্চিমাদের।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন