বাংলাদেশ
এসএসসি-এইচএসসিতে অটোপাসের ইঙ্গিত শিক্ষামন্ত্রীর
চলতি বছর এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা না নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে চলতি শিক্ষাবর্ষের এ স্তরের পরীক্ষার্থীদের অটোপাস দেয়া হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষার্থীরা যাতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে কী পদ্ধতিতে তাদের পাস করানো হবে সেই প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে।
আজ রোববার (১৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এমন কথা জানান।
দীপু মনি বলেন, ‘বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে দেশের ২০টি জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ, ১০টি জেলায় লকডাউন চলছে। অনেক দেশেও লকডাউন চলছে। বর্তমানে ভাইরাসের নানা ধরনের ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো নিয়ে ঝুঁকি অনেক বেশি, বিশেষজ্ঞরাও সেসব নিয়ে কথা বলছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বাধ্য হয়েছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়াতে। এরপরও আমরা পরিস্থিতি কতটা কোন দিকে যায় সেদিকে নজর রেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষাব্যবস্থাকে চালু রেখেছি। নানাভাবে সেটিকে চালু রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা ৮০-৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর বেশি পৌঁছাতে পারিনি। কাজেই এতে ১৫-২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাতে পারিনি বলে অ্যাসাইনমেন্ট চালু করেছি। তা দিয়ে আমরা ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। তারপরও শতকরা সাত ভাগ শিক্ষার্থী এখনও শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে রয়েছে। আমাদের চেষ্টাগুলো অব্যাহত রয়েছে, আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে যারা এবার এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা, উদ্বেগটা মূলত তাদের জন্য বেশি।’
এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চিন্তা করেছিলাম স্কুল-কলেজ খুলে দিতে পারলে এসএসসির জন্য ৬০ দিন এবং এইচএসসির জন্য ৮০ দিন ক্লাস নিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরীক্ষা নিতে পারব। এখন যদি সেটি না হয় আমরা তার বিকল্প নিয়ে চিন্তা করছি। আমি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের যেসব পড়া ও অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হচ্ছে তারা যেন সেটি বাসায় বসে শেষ করেন। বাড়িতে বসে স্বাভাবিকভাবে যতটুকু সম্ভব তা যেন করে যায়। এমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না যাতে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হচ্ছে তা কীভাবে পুষিয়ে নেয়া যায় তা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।’
বর্তমানে আমরা আদৌ পরীক্ষা নিতে পারব কি-না, পরীক্ষা না নিতে পারলে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তার সব কিছু নিয়েই আমাদের চিন্তাভাবনা রয়েছে। আমরা একটি প্রস্তুতির দিকে যাচ্ছি। পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত ও ভুল পথে না যেতে পরামর্শ দেন তিনি। পরীক্ষা দিতে হবে কি-না তা পরের কথা, আগে সুস্থ থাকতে হবে। এক বছর পরীক্ষা দিতে না পারলে জীবনে কোনো বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে না। আমরা চাই আমাদের সন্তানরা সুস্থ থাকুক। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারেও কী করা যায় সেটি নিয়েও আমরা ভাবছি। ভর্তিচ্ছুদের এটি নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগী এবং ১৮ মার্চ প্রথম শনাক্ত রোগীর মৃত্যু হয়। গত বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর এইচএসসি-সমমান পরীক্ষায় অটোপাস দেয়া হয়। জেএসসি-জেডিসি ও এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
শুভ মাহফুজ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ