জাতীয়
ফোর্বসের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় শেখ হাসিনা
মার্কিন অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক সাময়িকী ফোর্বসের ২০২২ সালের বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪২তম স্থানে রয়েছেন। বিশ্বজুড়ে রাজনীতি, মানবসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং গণমাধ্যম খাতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে আসা প্রভাবশালী নারীদের মাঝ থেকে ১০০ জনকে বেছে নিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস।
এর আগে, গেলো বছর বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় ৪৩তম স্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা। এ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের একধাপ উন্নতি ঘটেছে। তারও আগে ২০২০ সালে ফোর্বসের এই তালিকায় ৩৯তম স্থানে ছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্বের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় শেখ হাসিনা সম্পর্কে ফোর্বস লিখেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা চতুর্থ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হয়েছেন তিনি; যা তার মেয়াদেই টানা তৃতীয়বার। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮টিতে জিতে তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
ফোর্বস বলছে, এবারের মেয়াদই নিজের জন্য শেষ হিসেবে মনে করেন শেখ হাসিনা। এই মেয়াদে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে গুরুত্ব দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
মার্কিন এই সাময়িকী লিখেছে, শেখ হাসিনার চলমান লড়াই বাংলাদেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করছে। বাংলাদেশি নির্বাচনে ভোটারদের দমনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শেখ হাসিনা ও তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
২০০৪ সাল থেকে প্রত্যেক বছর বিশ্বের প্রভাবশালী নারীদের তালিকা প্রকাশ করে আসছে ফোর্বস। এবারের ১৯তম সংস্করণে মার্কিন এই সাময়িকী বিশ্বের ৩৯ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), ১০ জন রাষ্ট্রপ্রধান, ১১ জন বিলিওনেয়ারকে বেছে নিয়েছে।
ফোর্বসের এ বছরের বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালী নারী নির্বাচিত হয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ভন ডার লিয়েন। গেলো ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর এক সপ্তাহ পর মস্কোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের তিনটি নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন তিনি।
রাশিয়ার লাগাম টানতে ইউরোপীয় কমিশনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে মস্কোর লেনদেন বাতিল, রাশিয়ার বিমানের জন্য ইউরোপের আকাশসীমা বন্ধ এবং ইউরোপে ক্রেমলিনের মালিকানাধীন গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো সাহসী পদক্ষেপ নেয়ায় তাকে এই বছরের বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালী নারী হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফোর্বস।
এরপরই ফোর্বসের দ্বিতীয় শীর্ষ ক্ষমতাধর নারী নির্বাচিত হয়েছেন ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিন লাগার্দে। তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন গেলো বছরের ২১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ-এশীয় নারী হিসেবে ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়া ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস।
ফোর্বস বলছে, অনেক প্রথমের জন্ম দেয়া কমলা হ্যারিস ২০১৬ সালে প্রথম ভারতীয়-আমেরিকান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন। তারও আগে ২০১০ সালে প্রথম আফ্রো-আমেরিকান এবং প্রথম নারী হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গাড়ি নির্মাতা মার্কিন কোম্পানি জিএম এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ম্যারি ব্যারা আছেন চতুর্থ স্থানে। আর গেলো বছরের মে মাসে স্বামী বিল গেটসের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বিশ্বের অন্যতম ধনী নারীতে পরিণত হওয়া মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস ফোর্বসের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় ৬ষ্ঠ স্থানে আছেন। ২০২১ সালের এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।
মানবাধিকার ও নারী অধিকার রক্ষায় কাজ করে আসছেন মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস। বিচ্ছেদ হলেও দাতব্য সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মেলিন্ডা গেটসের সম্পদের পরিমাণ ৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তালিকায় ই–কমার্স জায়ান্ট আমাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেফ বেজোসের সাবেক স্ত্রী, সমাজসেবক ও লেখক ম্যাকেঞ্জি স্কট ১১তম স্থানে রয়েছেন। ২৫ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসানের পর ২০১৯ সালে আমাজনের ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক হন ম্যাকেঞ্জি। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ফোর্বসের প্রভাবশালী নারীদের তালিকায় ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আছেন ৩৬তম স্থানে। গেলো বছর এই তালিকায় ৩৭তম স্থানে ছিলেন ২০১৯ সালে ভারতের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া সীতা। তিনিই ভারতের প্রথম পূর্ণ নারী অর্থমন্ত্রী। নির্মলা ছাড়াও ভারতের আরও পাঁচ নারী ২০২২ সালের ফোর্বসের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় জায়গা পেয়েছেন।
গেলো সেপ্টেম্বরে হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাণ হারানো ২১ বছর বয়সী তরুণী জিনা মাহসা আমিনিকেও বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় রেখেছে ফোর্বস। ইরানি এই তরুণী ১০০তম প্রভাবশালী নারী (মরণোত্তর) নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন