ফুটবল
ট্রাইবেকারের পেনাল্টি শুটআউট ইতিহাস জানেন কি!
এবারের বিশ্বকাপ ফুটবল আসরে বেশ কিছু ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে টাইব্রেকারে পেনাল্টি শুটে। খেলার ফলাফল অমীমাংসিত থাকলে পেনাল্টি শুট আউট পক্রিয়া। যার মাধ্যমে ব্রেক বা ভাঙ্গা হয় ম্যাচের টাই। নির্ধারণ করা হয় জয় পরাজয়। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় টাইব্রেকার।
কিন্তু কিভাবে আসলো এই ট্রাইবেকার কিংবা পেনাল্টি শুট আউট পদ্ধতি তা জানেন কি?
ফুটবলে ফাউল এড়াতে প্রথম পেনাল্টি পদ্ধতি অনুমোদন হয় ১৮৯১ সালের ২ জুন তারিখে। যুক্তরাজ্যের ক্লাব ওলভহার্মটন ওয়ান্ডারার্সের জন হিথ নামে একজন ফুটবলার ইতিহাসে প্রথম পেনাল্টি কিক করেছিলেন, যুক্তরাজ্যের আরেক ফুটবল দল একরিংটন স্ট্যানলির বিপক্ষে। পরবর্তীতে এই পেনাল্টি শ্যুট কিংবা ট্রাইব্রেকার পদ্ধতির প্রচলন হয়।
ইউরোপ ফুটবলে পঞ্চাশের দশকে বিভিন্ন ঘরোয়া লীগ যেমন ১৯৫২ সালের যুগোস্লাভ কাপ, ১৯৫৮ সালের কোপা ইতালিয়া কাপ ইত্যাদিতে পেনাল্টি শুট আউটের নিয়ম ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবলে চালু হতে বেশ সময় লাগে।
একসময় খেলার ফলাফল অমীমাংসিত থাকলে নিয়ম ছিল টস্ করে ফলাফল নির্ধারণের। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬৮ সালে ইউরোতে সেমিফাইনালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে ড্র করেছিলো ইতালি। তারপর কয়েন টসে ফাইনালে উঠেছিল ইতালি।
আধুনিক ফুটবলের পেনাল্টি শুট আউটের প্রথম ধারণা দেন ইসরাইলী সাংবাদিক ইয়োসেফ দাগান । ১৯৬৮ সালে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত অলেম্পিকে বুলগেরিয়ার সাথে ম্যাচ ড্র করে ইসরায়েল। তারপর কয়েন টসে ম্যাচ হেরে যায় ইসরায়েল। এরপর দাগানের দেওয়া প্রস্তাবনা যাচাই বাচাই করে কিছু সংশোধনীর মাধ্যমে পাশ করে ফিফা।
কোনো আন্তর্জাতিক আসরের ম্যাচে প্রথমবারের মতো টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। সেবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে চেকোস্লোভাকিয়া ট্রাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে হারায় পশ্চিম জার্মানিকে। ঐতিহাসিক প্রথম শটটা ঠিকমতোই জালে পাঠিয়েছিলেন চেকোস্লোভাকিয়ার খেলোয়াড় মারিয়ান ম্যাসনি।
বিশ্বকাপের আসরে ১৯৭৮ আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে প্রথম চালু হয়েছিল পেনাল্টি শুট আউটে টাইব্রেকার। তবে সেবার একটি ম্যাচও গড়ায় নি টাইব্রেকারে। তবে আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাই পর্বে ১৯৭৭ সালের ৯ জানুয়ারি তিউনিসিয়া টাইব্রেকারে হারিয়েছিলো মরক্কোকে। ঠিক তার পরের বিশ্বকাপ অর্থাৎ ১৯৮২ সালে স্পেন বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্স ও পশ্চিম জার্মানির ম্যাচটি বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম টাইব্রেকারে জয় পরাজয় নির্ধারণ হয়।
বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথম ট্রাইবেকারে পেনাল্টি শ্যুট আউটে খেলার নিষ্পত্তি হয় ১৯৯৪ বিশ্বকাপে। ইতালিকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারিয়ে সেবার শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টাইব্রেকারে গেছে আর্জেন্টিনা। আলবিসেলেস্তারা ৬ বার পেনাল্টি শুট আউটে গেছে। যার মধ্যে জিতেছে ৫ বার। আর্জেন্টিনার পরের অবস্থানে আছে ক্রোয়েশিয়া ও জার্মানি। চার বার ট্রেইব্রেকারে মুখোমুখি হয়ে এই দুই দল এখন পর্যন্ত পরাজিত হয়নি।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন