আন্তর্জাতিক
সঙ্কট বাড়ায় পেরুতে জরুরি অবস্থা
সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো ক্যাসটিলোকে ক্ষমতাচ্যুত ও আটকের পর এক সপ্তাহের প্রতিবাদ ও রাজনৈতিক অভ্যুত্থান পরিস্থিতি সামাল দিতে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) পেরুর প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলবার্তো ওটারোলা ভাঙচুর ও সহিংস পরিস্থিতির কারণে নতুন ৩০ দিনের তৎপরতা ঘোষণা করেন যার মধ্যে রয়েছে স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও সমাবেশের ওপর স্থগিতাদেশসহ কারফিউ জারির মতো অবস্থা এবং সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরির মতো ব্যবস্থা।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি, সর্বোপরি কৌশলগত অবকাঠামোসহ পেরুবাসীর নিরাপত্তায় দেশের পুলিশ সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোতভাবে সহায়তা করবে।’
সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো ক্যাসটিলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে শুনানি শুরু হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়।
এদিকে, ক্যাসটিলোর সমর্থকরা দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি জুড়ে বামপন্থি এই নেতার মুক্তির দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। পাশাপাশি তারা নতুন নির্বাচন ও ক্যাসটিলোর উত্তরাধিকারী দিনা বলুআর্তের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
সঙ্কটের শুরু গত সপ্তাহে যখন ক্যাসটিলো পেরুর কংগ্রেস ভেঙে দিয়ে ডিক্রির মাধ্যমে দেশ শাসণের ঘোষণা দেন। সাবেক শিক্ষক ও ইউনিয়ন নেতা ক্যাসটিলো গত বছরের জুলাই মাসে ক্ষমতায় এসেছিলেন।
ক্যাসটিলোর এ ধরনের উদ্যোগকে বিরোধী দল অসাংবিধানিক হিসেবে ঘোষণা করে এবং গত বুধবার কংগ্রেসে অভিসংশন প্রস্তাবের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে সর্বসম্মতভাবে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়।
এর পরপরই দিনা বলুআর্তে পেরুর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন এবং ক্যাসটিলোকে আটক করে রাজধানী লিমার অদূরে পুলিশের কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি সেখানে এখনও আটক আছেন।
পেরুর আইনজীবীরা এ সপ্তাহে জানায় তারা ক্যাসটিলোকে ১৮ মাস আটক রাখতে চান। তবে ক্যাসটিলো তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন তার প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে আটক রাখা হয়েছে।
এদিকে প্রাথমিকভাবে সাত দিনের আটকাদেশের মেয়াদ শেষ হবার পর ক্যাসটিলো তার সমর্থকদের প্রতি তাকে যেখানে আটক রাখা হয়েছে সেখানে আসার ডাক দেন। তিনি আন্ত-আমেরিকান মানবাধিকার আদালতকে তার পক্ষে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান।
পেরুর ন্যায়পাল কার্যালয় এক বিবৃতিতে বিক্ষোভে ছয়জন নিহত হওয়ার সংবাদ দিয়েছে। আর এসব সহিংস ঘটনার বেশিরভাগই ঘটেছে দেশটির গ্রামাঞ্চলে যেখানে ক্যাসটিলোর জোড়ালো সমর্থন রয়েছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন