জাতীয়
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছে বর্তমান সরকার: প্রধানমন্ত্রী
দেশি-বিদেশি সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছে বর্তমান সরকার। সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন, এর সব করা হয়েছে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না, সেই আইনও হয়েছিল এ দেশে। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে খুনিদেরকে বিচার থেকে রেহাই দিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। ৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স আইন বাতিল করে জাতির পিতার পরিবারের হত্যার বিচারের কাজ শুরু করে। সেসময় অনেক বাধা আসে কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সব বাধা অতিক্রম করে। পরে ২০০৯ সালে বিচারক তোফাজ্জেল সাহেব রায় কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছিলো বলেই জাতির পিতার হত্যার বিচার হয়েছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর পর অনেক বাধা সৃষ্টি হয়। দেশের বাইরেরে রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই বিচারের অনেক বাধা দেয়ার চেষ্টা করে, এমনকি কেউ কেউ তার কাছে টেলিফোন করে কথাও বলে। এ ধরনের চাপের পরও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, বিগত সরকারগুলো বাংলাদেশটাকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল, মনে হচ্ছিল এটি পাকিস্তানের একটি প্রদেশ। মানুষের কাছে ভিক্ষা চেয়ে চলার অবস্থায় চলে গিয়েছিল। বিচার পাওয়ার অধিকারটুকুও ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার করে যেমন বিচারের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে তেমনি এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কার্যকর্মের ধরন পাল্টে যাচ্ছে। এজন্য আইনও তৈরি করা হয়েছে, এর বিরুদ্ধে অনেকে অনেক কথা বলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটা একান্ত প্রয়োজন, এ কারণেই এখন কিন্তু আগের মত মল্লযুদ্ধ হয়না এখন বোতাম টিপে হয়। এমনকি এখন অনলাইনে ট্রেনিং দেয়া হয় কিভাবে বোমা বানাবে, কিভাবে মানুষ খুন করবে। কাজেই সব ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী আইনগুলোকে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।
ভার্চুয়াল আদালত প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, করোনা মহামারির সময় ভার্চুয়াল কোর্ট প্রতিষ্ঠা করে অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। আইনজীবীদের জন্যও সুবিধা হয়েছে তারা যেকোনো জায়গা থেকেই আদালত পরিচালনা করতে পারছেন। সারাদেশে ই-জুডিশিয়াল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ই-জুডিশিয়ালি চালু করা গেলে মামলা ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আসবে।
বিচারকদের সুযোগ সুবিধা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিচারকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের জুডিশিয়াল একাডেমী প্রতিষ্ঠা করে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে জায়গা দেখা হয়েছে সেটা কার্যকর কিনা সেটা দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে একটা আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিচারকদের বাসস্থানের জন্য ফ্ল্যাট করে দেয়া হচ্ছে। এটা শুধু ঢাকা শহরে না প্রতিটি জেলায় জেলায় তাদেরকে নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। সেইসঙ্গে বিচারকদের গাড়ি ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য গাড়ি ঋণ নগদায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার চায় দেশের সব মানুষ যেনো ন্যায় বিচার পায়, মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয় এবং একটা স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার সৃষ্টি হয়।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন