বাংলাদেশ
ঝালকাঠিতে নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় ছাত্রলীগ নেতা নিহত
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত সাতজন। গতকাল মঙ্গলবার (২২জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নের বিল ছোনাউটা গ্রামের কেরাত আলী খান মাদ্রাসাসংলগ্ন বাজারে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
নিহত ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. আরিফুল ইসলাম (২০)। তিনি আমুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বিল ছোনাউটা গ্রামের মো. শাহ আলম আকন ওরফে লাল মিয়ার ছেলে আরিফুল। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন নিহত আরিফুল ইসলামের বাবা মো. শাহ আলম আকন (৬০), মা শাহানাজ পারভীন (৫০), ভাই শরিফুল ইসলাম (২৬), চাচাতো ভাই ইব্রাহীম আকন (২৫), চাচা সোহরাব আকন (৫৫) এবং প্রতিপক্ষের মালেক সিকদার (৬০) ও অলিম সিকদার (৬০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, ২১ জুন আমুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের (বিল ছোনাউটা) ইউপি সদস্য পদে মজিবর সিকদার টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ও মো. জিয়াউল ফারুক ফুটবল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জিয়াউল ফারুকের সমর্থক ছিলেন আরিফুল ইসলাম। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মো. হোসেন নামের আরিফুল ইসলামের এক চাচাতো ভাইকে ছানাউটা গ্রামের কেরাত আলী খান মাদ্রাসাসংলগ্ন বাজারে একটি দোকানে মজিবর সিকদারের লোকজন আটকে রাখেন। এমন খবর পেয়ে ওই বাজারে অবস্থিত একটি অফিস ঘরে জড়ো হন আরিফুল ইসলাম, তাঁর বাবা মো. শাহ আলম আকন, মা শাহানাজ পারভীন ও ভাই শরিফুল ইসলাম। সন্ধ্যা সাতটার দিকে মজিবর সিকদারের ৪০ থেকে ৫০ জন সমর্থক অতর্কিত ওই অফিস ঘরে হামলা চালান। এ সময় আরিফুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের সদস্য কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে মজিবর সিকদার ও জিয়াউল ফারুকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত আহত হয়েছেন সাতজন। তাঁদের আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরিফুলকে বরিশালের শের–ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর থেকে টিউবওয়েল প্রতীকের মজিবর সিকদার ও তাঁর সমর্থকেরা পলাতক বলে জানান কাঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আরিফের বাবা শাহ আলম আকন একটু সুস্থ হলেই একটি হত্যা মামলা করবেন। লাশের ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি চলছে।
এ বিষয়ে মো. জিয়াউল ফারুক বলেন, ‘টিউবওয়েল প্রতীকের মজিবর সিকদারের ইন্ধনে তাঁর সমর্থকেরা আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে আরিফুলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে মজিবর সিকদার মুঠোফোনে দাবি করেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।’
আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎক তাপস তালুকদার জানান, মাথায় প্রচণ্ড আঘাত ও প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে আরিফুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ