ফুটবল
রোনালদোর রেকর্ডের দিনে ইউরোর শেষ ষোলতে পুর্তগাল
রেকর্ড করতে ও ভাঙতে পছন্দ করেন পুর্তগালের অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। প্রথম ইউরোপিয়ান খেলোয়াড় হিসেবে আরও একটি রেকর্ডও গড়লেন সিআর৭। ইউরোর নক আউট পর্বে ফ্রান্সের বিপক্ষে দুই গোল করলেন রোনালদো। আর এতেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোল করা আলী দাইয়ির ১০৯ গোলের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন এই স্ট্রাইকার। বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলিয়ে এককভাবে ২০টি গোল রয়েছে তার ঝুলিতে। যা আগে ছিল জার্মানির ক্লোজার, ১৯টি।
হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের ফেরেন্স পুসকাস স্টেডিয়ামে নামে পুর্তগাল ও ফ্রান্স। গ্রুপ 'এফ' এর শেষ ম্যচে দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মাঠে নেমেছিল। গোটা ম্যাচে ছিল টানটান উত্তেজনা। সমান তালে লড়েছে দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে উঠে খেলা। বাঁচামরার লড়াইয়ে ফ্রান্সের বিপক্ষে অসাধারণ ফুটবলই উপহার দিয়েছেন রোনালদোরা। এর ফলও তাঁরা পেয়ে যান দ্রুত।
ম্যাচের ২৭ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলা পায় পুর্তগাল। পেনাল্টি থেকে এ গোল করেন পুর্তগিজ অধিনায়ক।
ভেসে আসা বল পাঞ্চ করে বিপদমুক্ত করতে যান ফ্রান্সের গোলকিপার উগো লরিস। কিন্তু তাঁর পাঞ্চ গিয়ে লাগে হেড নিতে যাওয়া পর্তুগালের দানিলোর মাথায়। রেফারি সঙ্গেই সঙ্গেই পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ফ্রান্সের খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ করলেও তা ধোপে টেকেনি। ভিএআর দেখে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন রোনালদো।
পেনাল্টিতে পিছিয়ে পড়া ফ্রান্স সমতায় ফেরে পেনাল্টি থেকেই। ৪৪ মিনিটে বক্সে ঢোকার মুখে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফাউল করেন পর্তুগালের এক ডিফেন্ডার। পেনাল্টি থেকে ফ্রান্সকে সমতায় রোনালদোর সাবেক সহ খেলোয়াড় করিম বেনজেমা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পর্তুগালের রক্ষণে চাপ তৈরি করে খেলতে থাকে ফ্রান্স। করিম বেনজেমার একটি গোলও বাতিল হয় তখন। তবে ৪৭ মিনিটে ফ্রান্স এগিয়ে যায় বেনজেমার আরেক গোলে।
এরপরই পর্তুগাল শিবিরে হতাশা নেমে আসে। কিন্তু বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকার রোনালদো সবাইকে মাথা ঠাণ্ডা করে মরিয়া হয়ে খেলার পরামর্শ দেন। এর ফলটাও তারা পেয়ে যায় ম্যাচের ৬০ মিনিটে। বক্সের মধ্য থেকে রোনালদোর একটি ক্রস থেকে বল হাতে লাগে ফ্রান্সের এক ডিফেন্ডারের। পেনাল্টি থেকে পর্তুগালকে শেষ ষোলোতে আর দাইয়িকে ছুঁয়ে ফেলা গোলটি করেন রোনালদো।
শেষ পর্যন্ত ২-২ গলে ড্র হয় ম্যাচটি। তবে ড্র হলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছে গিয়েছে বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়নরা। ৩ ম্যাচে ১ জয় ও ২ ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ 'ই' সেরা হয়েছে ফ্রান্স। আর সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়েছে পুর্তগাল। একই গ্রুপ থেকে নকআউটে যাওয়া অন্য দল জার্মানি।
পুরো ম্যাচে সমান ৫টি করে শট লক্ষ্যে রেখেছে দুই দল। ৫৩ শতাংশ সময় নিজেদের পায়ে বল রাখে এমবাপ্পেরা। তবে হলুদ কার্ডও বেশি দেখেছে ফ্রান্স। দলটির চার খেলোয়াড় হলুদ কার্ড দেখেছে যেখানে পুর্তগালের জুলিতে শূন্য কার্ড। গোটা ম্যাচে কর্নার হয়েছে মাত্র একটি, যা পেয়েছে ফ্রান্স।
এএ
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//