খুলনা
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক কর্মকর্তার কারাদণ্ড
অর্থ আত্মসাত করার অপরাধে আব্দুর রহিম নামে সাবেক গ্রামীণ ব্যাংকের কেন্দ্র ব্যবস্থাপককে (বরখাস্তকৃত) পৃথক দুটি ধারায় ৬ ও ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ লাখ ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ১০ ও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়ার বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু।
দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুর রহিম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার হরিনারায়ণ পুর শাখার গ্রামীণ ব্যাংকের কেন্দ্র ব্যবস্থাপক ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামি আব্দুর রহিমকে পেনাল কোডের ৪০৯ ধারাধীনে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করার অপরাধে এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারাধীনে অপরাধমূলক অসদাচারনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে প্রথম ধারায় ছয় বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, দ্বিতীয় ধারায় চার বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও বিশ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে দশ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
দুদক ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর হইতে ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত আব্দুর রহিম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার হরিনারায়ণ পুর শাখার গ্রামীণ ব্যাংকের কেন্দ্র ব্যবস্থাপক ছিলেন। দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় তিনি বিভিন্ন গ্রহীতার কাছ থেকে ১০ লাখ ৮৯ হাজার ২০৪ টাকা আদায় করে। তৎকালীন সময়ে ওই ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট ওই টাকা হস্তান্তর না করে অবৈধভাবে নিজেই আত্মসাত করেন আব্দুর রহিম।
এ অভিযোগে ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় মামলাটি করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কুষ্টিয়ার ততকালীন উপ-পরিচালক শহীদুল ইসলাম মোড়ল। মামলাটি দীর্ঘ সময় ধরে তদন্তের পর আদালতে ওই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিকে শাস্তির আদেশ দেন।
দুদকের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামি আব্দুর রহিমকে দুই ধারায় পৃথকভাবে ৪ ও ৬ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি তাকে ২০ লাখ ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১০ ও ৩ মাসের বিনাশ্রম সাজার আদেশ দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন