বিএনপি
বিএনপির গণঅবস্থান: রাজপথে থাকবে আ.লীগ
বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলের যুগপৎ গণঅবস্থান কর্মসূচির পাল্টা আজ বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির অবস্থানসহ নগরীর মোট আটটি স্পটে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে মিত্র দলগুলো। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো কমপক্ষে পাঁচটি স্থানে বড় ধরনের সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
সরকারবিরোধী ও ক্ষমতাসীন দলের পাল্টাপাল্টি এমন কর্মসূচিতে কিছুটা হলেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। যদিও উভয় পক্ষ থেকেই ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটানোর শর্তে বিএনপিকে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। এমনকি বিরোধী দলের গণঅবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতেও তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।
ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির আজকের গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে ঢাকাসহ দেশের ১০ সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে। কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন নেতাকর্মী।
সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অন্যান্য বিভাগেও বিএনপির এ কর্মসূচি পালিত হবে। এ ছাড়া যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আরও প্রায় ৫২ দল ও সংগঠন পৃথকভাবে রাজধানীর সাতটি স্থানে এ কর্মসূচি পালন করবে।
তবে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির ওয়ান-ইলেভেন সামনে রেখে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এ উপলক্ষে দেশের সব মহানগরী শাখায় আলোচনা সভার আয়োজন করবে দলটি। আজকের গণঅবস্থান কর্মসূচি থেকে বিরোধী দলগুলো নতুন কর্মসূচি হিসেবে ১৬ জানুয়ারি বিভাগীয় শহরগুলোতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে বিরোধী দল ও জোটের এমন কর্মসূচি ঘিরে আগেই রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থান তথা সতর্ক পাহারায় থাকার ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে ইস্যু হিসেবে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি মোকাবিলা ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালনের কর্মসূচিও সামনে এনেছেন সরকার সমর্থকরা। এ দুই ইস্যুতে এখন পর্যন্ত রাজধানীর পাঁচটি স্থানে শান্তি সমাবেশ ও আলোচনা সভার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আওয়ামী লীগের বড় অবস্থান সমাবেশ হবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের নেতৃত্বে অবস্থান সমাবেশ করবেন সরকার সমর্থকরা। সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভার মাধ্যমে বড় ধরনের শোডাউন করা হবে সেখানে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বিকেল ৩টায় মিরপুর ১ নম্বরের ঈদগাহ মাঠে। উভয় কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যোগ দেবেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগও রাজধানীতে দুটি বড় সমাবেশ করবে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে যুবলীগ-ঢাকা মহানগর উত্তরের ব্যানারে সকাল ১১টায় রাজধানীর ফার্মগেটে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ব্যানারে দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৃথক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করবে।
নতুন কর্মসূচি দিচ্ছে বিএনপি ও মিত্ররা: আজকের গণঅবস্থান শেষে নতুন কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বিএনপি ও তার মিত্ররা। এ কর্মসূচিতে রয়েছে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৬ জানুয়ারি ১০টি বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি। এ ছাড়া ২৬ জানুয়ারি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে জোট ও দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এখনও তা চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯ জানুয়ারি পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবে দলটি। ২৫ জানুয়ারি ‘বাকশাল দিবস’ উপলক্ষে নতুন কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। ওই দিনকে ঘৃণা প্রদর্শনের জন্য কালো পতাকা প্রদর্শন, মানববন্ধন কিংবা সমাবেশের কর্মসূচি নির্ধারণ করা হতে পারে।
সমাবেশের অনুমতি নিতে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে। সেখান থেকে বেরিয়ে ডা. এ জেড এম জাহিদ বলেন, তাঁদের আলোচনা সফল হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। অবশ্য দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কের একপাশে বুধবার এই কর্মসূচি পালনের অনুমতি পেয়েছেন বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটাবে না- এই শর্তে বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি ‘গণঅবস্থান’ সফল করতে এরই মধ্যে দলের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিভাগের এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন সদ্য কারামুক্ত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাস।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ গণঅবস্থানে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড থেকে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইভাবে দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর জন্যও রয়েছে একই বার্তা। কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা বিভাগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয়েছে। এসব নেতা নেতাকর্মীর সঙ্গে থাকবেন এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন। নয়াপল্টনের সামনে আয়োজিত এ গণঅবস্থানে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় শহরে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনে সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। এ জন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।
ঢাকা বিভাগের মতো অন্যান্য বিভাগেও দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতারা নেতৃত্ব দেবেন। এর মধ্যে সিলেটে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে ড. আবদুল মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে বেগম সেলিমা রহমান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু এবং ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান গণঅবস্থান কর্মসূচির সার্বিক নেতৃত্ব দেবেন। এ ছাড়া এর আগে গঠনকৃত সমন্বয় টিমের দলনেতা, সমন্বয়কারী, সমন্বয় সহযোগীসহ বিভাগের অন্তর্গত জেলাগুলোর অধিবাসী কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক, সদস্য, জেলা, উপজেলা, মহানগরসহ অন্য নেতারা বিভাগীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
বিএনপি ছাড়াও সাতদলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, ৪ দলের জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং ১৫ সংগঠন সমন্বয়ে সমমনা গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা ঘোষিত গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। এদিন সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রাজনৈতিক বন্দি মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদী গণঅবস্থান করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। ১২ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে পুরানা পল্টনের প্রীতম হোটেলের উল্টো দিকে সড়কে এবং ১২ দলীয় জোট বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) কারওয়ান বাজার এফডিসি-সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে, গণফোরাম আরামবাগ নটর ডেম কলেজের সামনের সড়কে, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য জোট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্ব প্রান্তের সড়কে এবং সমমনা গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা বিজয়নগর আকরাম টাওয়ারের সামনের সড়কে অবস্থান নেবেন।
আওয়ামী লীগের অবস্থান: সকাল থেকে রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডে নেতাকর্মীর মিছিল ও ‘সতর্ক পাহারায়’ থাকবেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নাশকতার আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ামাত্র প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নেতাকর্মীরাও প্রতিহত করার চেষ্টা করবেন। ঘোষিত দুটি সমাবেশে লোকসমাগমের জন্য এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। একই রকম প্রস্তুতি নিয়েছে যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অন্য সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তরের অধীন ২৬টি থানা, ৫৪টি ওয়ার্ড এবং একটি ইউনিয়নের সবক’টিতেই নেতাকর্মীর পাহারা বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অধীন ২৪টি থানা ও ৭৫টি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতাকর্মীর সতর্ক পাহারা বসানো হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল দলীয় ফোরামের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সুসংহত। দেশি-বিদেশি যে কোনো ষড়যন্ত্র ও আন্দোলনের নামে সহিংসতা হলে সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ।
বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানালেন তারেক রহমান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১২ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন বার্তায় তারেক রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন। যদি পেছনে ফিরে তাকাই গেলো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক অধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার পর এই মুহুর্তটি এসেছে। আমাদের সাহসী ছাত্র-শিক্ষক, কর্মী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে গৃহিণী, সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী- সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ শুধু কোটা সংস্কার নিয়ে নয়, নজিরবিহীন দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যায়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই শাসনের পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির অবস্থা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি পাবলিক ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন এবং জনগণের সেবা করে একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং এর ফলে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের দরবার হলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
জেএইচ
বিএনপি
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে সরকারের প্রধান করা হয়েছে: ফখরুল
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আবেগপ্লুত মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যে দৃশ্য দেখেছি তা সহ্য করার মতো না।
নতুন সরকার দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে আশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতিকে সচল রাখার দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র ও আমাদের মনোনীত ব্যক্তি ড. ইউনূস। তার সফল নেতৃত্বে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
এএম/
বিএনপি
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করবে বিএনপি : ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে নির্বাচন আয়োজনে এ সরকরারকে বিএনপি পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা বিএনপি তাকে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন তাদের না দেয়া হয়। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন