জাতীয়
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চীন বিশ্বস্ত অংশীদার : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ ও জাতীয় মৌলিক স্বার্থের ভিত্তিতে চমৎকার সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। বাংলাদেশ তার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চীনকে একটি বিশ্বস্ত অংশীদার বলে মনে করে। সম্প্রতি সিপিসির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি উপহার দেয়াসহ কোভিড-১৯ এর এই বৈশ্বিক মহামারিকালে চীন বাংলাদেশকে যে সহযোগিতা ও সহায়তা দিয়েছে। বললেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না (সিপিসি)’র শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চীনের জনগণ, দেশটির প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি’র মহাসচিব শি জিনপিংকে শুভেচ্ছা বর্তায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান কৌশলগত অংশীদারিত্বকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন নতুন পথ খুঁজছি। পাশাপাশি, আমরা শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের মতো আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু নিয়েও কাজ করছি।
তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে-আমাদের দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান আন্তরিক ও হৃদত্যপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরো জোরদার হবে।’
শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের দুই দলের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতা আমাদের দু’দেশের নাগরিকদের অধিকতর কল্যাণ বয়ে আনবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে এবং সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আপনাকে (চীনের প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি’র মহাসচিব শী জিনপিং) এবং আপনার মাধ্যমে চীন সরকার, সিপিসি’র সদস্যবৃন্দ ও চীনের বন্ধু-প্রতিম জনগণকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, সাউদার্ন সিল্ক রুট- এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে- যা দুটি প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে জ্ঞান, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বিগত কয়েক দশকে বেশ কয়েকজন সিপিসি নেতার বাংলাদেশ-চীন এবং সিপিসি-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পর্ক উন্নয়নে অবদানের কথা তুলে ধরে, তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালের চীন সফরের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের একজন তরুণ নেতা হিসেবে- বঙ্গবন্ধু তৎকালীন সিপিসি নেতৃবৃন্দের সাথে মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময়ের আরো সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর বই ‘আমার দেয়া নয়াচীন’-১৯৫২ এ সিপিসি’র নেতৃত্বে চীনকে একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চীনের জনগণের প্রবল উদ্যম, কঠোর-প্রত্যয় ও দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ মনোভাবের প্রশংসা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সুবিবেচনাপূর্ণ রাজনীতি ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না সকলের জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে দেশটিকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছে।
তিনি বলেন, মাত্র অল্প কয়েক দশকের মধ্যেই চীন আশ্চর্যজনক ও উৎসাহ-ব্যঞ্জক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি লাভ করেছে। দেশটি আজ উচ্চ-মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে মহাকাশ থেকে ন্যানো প্রযুক্তি, রবোটিক্স থেকে অ্যাভিওনিক্স সব ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটিয়েছে। এছাড়াও, দেশটি আজ বিশ্বমানের পণ্য ও সেবা প্রদান করছে। এমনকি চীনের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর সাধারণ মানুষও উন্নয়ন এই সুফল ভোগ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনুরূপভাবে এক সময়ে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে। আর এখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’- একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে দলটি কাজ করে যাচ্ছে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ