লাইফস্টাইল
কোলেস্টেরল কমাতে তুলসির জুরি মেলা ভার
কোলেস্টেরল এখন পারিবারিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩০ বছর বয়েসের পর থেকে সবাই এখন এই সমস্যায় ভুগছেন। তবে, এর মূলে দায়ী কিন্তু নিজেরাই। আমাদের লাইফস্টাইলের ভুলভ্রান্তি এই সমস্যার মূল কারণ বলেন চিকিৎসকরা। তবে এই বিষয় নিয়ে পড়ে কথা বলছি। প্রথমে কোলেস্টেরল কী, কেন হয়-এসব নিয়ে কথা বলা যাক।
চিকিৎসকদের মতে, কোলেস্টেরল হল রক্তে জমে থাকা মোমের মতো একটি পদার্থ। আমাদের শরীরে ভালো-খারাপ দুই ধরনেরই কোলেস্টেরল থাকে। একটি হল এইচডিএল এবং অন্যটি লো-ডেন্সিটি লাইপ্রোটিন। এর মধ্যে দ্বিতীয়টি খারাপ। তাই রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে কপালে ভাঁজ পড়তে পারে। আর এই কোলেস্টেরলের হাত ধরে দেখা দিতে পারে স্ট্রোক বা হৃদরোগের সমস্যা। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা টের পাওয়া যায় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু)-এর মতে, কোলেস্টেরল থেকে বিশ্বে প্রতি বছর ২.৬ মিলিয়ন মানুষ মারা যান।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, কোলেস্টেরলের সমস্যা বেড়ে গেলে আমাদের নিতম্ব, পায়ের পাতা অথবা ঊরুর পেশিতে ব্যথা হতে পারে। হাঁটতে গেলেও ব্যথা হতে পারে। তাই এমন কোনও সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া বাঞ্ছনীয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা এবং রোজ ব্যায়াম করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। তবে, এর জন্য কিছু ভেষজও ব্যবহার করতে পারেন। যার মধ্যে একটি হল তুলসি। আপনি তুলসি ব্যবহার করলে আপনার শিরায় জমে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল দূর হবে সহজেই। আসুন জেনে নিই কী ভাবে ব্যবহার করতে হবে।
জার্নাল অফ ফাংশনাল ফুড-এ প্রকাশিত ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তুলসি গাছ ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সের মানুষদের মধ্যে বিপাকীয় ব্যাধি দূর করতে সাহায্য করে। গবেষণায় আরও জানা যায়, নিয়মিত তুলসি খেলে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে সহজেই।
তুলসিকে ভারতে আয়ুর্বেদিক ভেষজ উদ্ভিদের রানী হিসেবে মনে করা হয়। এই ভেষজটি কেবল ওষধি গুণ রয়েছে তা নয়, আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে প্রাচীনকাল থেকে বহু রোগের চিকিৎসার জন্যও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর স্বাদ সামান্য তিক্তও বটে, তাই আপনি একে কাঁচা চিবিয়েও খেতে পারেন। আবার রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। এই ভেষজটিকে জুস হিসাবেও পান করতে পারেন।
গবেষণায় জানা গেছে, তুলসি পাতা শুধু কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় না রক্তে শর্করা এবং রক্তচাপের মাত্রাও কমিয়ে দিতে পারে। আপনি যদি বর্ধিত কোলেস্টেরলের সঙ্গে লড়াই করেন তবে এটি কমাতে বা দূর করতে আপনার প্রতিদিন কমপক্ষে ১ গ্রাম তুলসী পাতা খাওয়া উচিত।
iopscience.iop.org-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, তুলসির মধ্যে পলিফেনল যৌগ রয়েছে। যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ট্যানিন যৌগ যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। পাশপাশি ফ্যাটের অক্সিডেশন প্রতিরোধ করতে পারে। তাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোলেস্টেরল কমাতে হলে ভরসা করতে পারেন এই ঘরোয়া ভেষজের উপর।
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
লাইফস্টাইল
জুতো-মোজার দুর্গন্ধ দূর হবে যেভাবে
এসে গেছে বৃষ্টির দিন। দিনভর ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বের হওয়াই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। বাড়ি থেকে বেরিয়েই কাকভেজাহয়ে অফিসে যাচ্ছে মানুষ। জুতো থেকে মোজা, সব ভিজে একেবারে চুপচুপে। সেই জুতো-মোজা পরেই সারাদিন কাটিয়ে দেয়া।
সবশেষে ঘরে পৌছে জুতো খুলতেই বিকট গন্ধ! এই পরিস্থিতির সম্মুখীন অনেকেই হচ্ছেন নিশ্চয়ই? এই সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপসে খুব সহজেই দূর করতে পারবেন জুতো, মোজার এই বাজে গন্ধ।
আসুন জেনে নেই তাহলে –
১. ছোট্ট একটি কাপড়ে অল্প পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে ছোট পুটলি বানিয়ে মোজার মধ্যে রেখে দিন। দেখবেন মোজা থেকে দুর্গন্ধ দূর হবে।
২. ন্যাপথোলিন গুঁড়ো করে নিয়ে ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে তা মিশিয়ে জুতোর মধ্যে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন জুতোয় আর দুর্গন্ধ হচ্ছে না।
৩. বাড়িতে ফিরেই ভিজে জুতো ভালো করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তারপর জুতোর মধ্যে কিছু পরিমাণ বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিন।
পরের দিন জুতোর ভিতর ভালো করে মুছে ফেলুন। দেখবেন গন্ধ দূর হয়েছে।
৪. জুতোর মধ্যে এক টুকরো ফেব্রিক সফটনার সিট রেখে দিন রাতে। পরদিন সেটি বের করে জুতো পরুন। বাজে গন্ধ একেবারে দূর হয়ে যাবে।
৫. বাড়িতে ফিরে জুতো ধুয়ে হেয়ার ড্রায়ার চালিয়ে হালকা শুকিয়ে নিন। এবার এক টুকরো কাপড় বা তুলো লবঙ্গ তেলে ভিজিয়ে জুতোর মধ্যে রেখে দিন সারারাত। জুতোর দুর্গন্ধ দূর হবে।
৬. ফুটন্ত জলে টি ব্যাগ ফেলে রাখুন ২ মিনিট। টি ব্যাগ ঠাণ্ডা হলে জুতোর মধ্যে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর তা সরিয়ে জুতোর ভেতরের অংশ ভাল করে মুছে নিন। দুর্গন্ধের পাশাপাশি দূর হবে তাতে থাকা ব্যাকটেরিয়াও।
জেডএস//
রেসিপি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির রেসিপি
আমের সিজনে অনেকেই আমের পাল্প ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সেই ম্যাংগো পাল্প দিয়েই ম্যাংগো পুডিং বানানো যাবে। আর আমের সিজনে তো ফ্রেশ আমই ব্যবহার করতে পারবেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি বেশ হেলদি একটি ডেজার্ট আইটেম। মাত্র ৪টি উপাদান দিয়েই ইয়াম্মি ইয়াম্মি ম্যাংগো পুডিং বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেই এখনই।
উপকরণ
ঘন দুধ- ১ কাপ
চিনি- স্বাদ অনুযায়ী ( আমি হাফ কাপ দেই )
আম- ২টি
ডিম- ২টি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির পুরো প্রণালী
১. প্রথমে আম ছোট ছোট করে কেটে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন এবং ঠাণ্ডা করে নিন।
২. এবার ব্লেন্ডার জগে আম, চিনি, দুধ ও ডিম সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
৩) মিশ্রণটি মোটামুটি ঘন ও থকথকে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, লিকুইড দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
৪. এবার একটি স্টিলের টিফিন বক্সে পুডিংয়ের মিশ্রণ ঢেলে নিতে হবে।
৫. বড় সসপ্যানে পানি ফুটতে দিন। এবার একটি স্ট্যান্ড প্যানে সেট করে তার উপর স্টিলের টিফিন বক্সটি রাখুন।
৬. বাটির ঢাকনা ভালোভাবে আটকাবেন এবং পানি যেন ভেতরে না যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৭. চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন, ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে চেক করুন পুডিং জমেছে কি না।
৮. পুডিং জমে গেলে চুলা নিভিয়ে দিন। এরপর রুম টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
ব্যস, আমের পুডিং বানানো হয় গেলো! চাইলে ফ্রিজে রেখে ম্যাংগো পুডিং ভালোভাবে সেট করে নিতে পারেন। সেট হয়ে গেলে টিফিন বক্স থেকে পুডিংটি একটি প্লেটে সাবধানে উল্টিয়ে ঢেলে নিন। এবার ছুরি দিয়ে পিস পিস করে কেটে সার্ভ করুন। আর এটি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে কিন্তু বেশি মজা লাগে। সব উপকরণগুলো বাসাতে থাকলে আজই বানিয়ে নিন দারুন মজাদার ডেজার্টটি।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন