ফুটবল
৯২ হাতছানি দিয়ে ডাকছে ড্যানিশদের
১৯৯২ সালে সুইডেনে অনুষ্ঠিত ইউরো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো ডেনমার্ক। এরপর কেটে গেছে ২৯ বছর। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা স্পর্শ তো দূরে থাক, শেষ চারেই জায়গা হয়নি ড্যানিশদের। চেক প্রজাতন্ত্রকে কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলে হারিয়ে সেই আক্ষেপ থেমেছে। সাথে নেয়া হলো ১৭ বছর আগের প্রতিশোধ। সেবার এই চেকদের কাছেই সেমিতে ওঠার স্বপ্ন ভেঙেছিল ডেনমার্কের।
দুঃস্বপ্নের মত শুরু হওয়া এবারের ইউরোর শেষ চারে যে ডেনমার্ক যাবে, তা হয়তো কল্পনাও করেননি কোন কোন কট্টর ড্যানিশ সমর্থক। তবে ফুটবল তো এমনই৷ চলতি ইউরোতে দলটির রূপকথা চলছেই।
আসরের প্রথম ম্যাচে মাঠেই অচেতন হয়ে পড়েন দলটির সবথেকে বড় তারকা এরিকসেন। সেই ম্যাচে হারের পর হেরেছে দ্বিতীয় ম্যাচেও।
বেলজিয়ামের সাথে ২ – ১ গোলে পরাজয়ের পর ডেনমার্কের বিদায় ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ তখন ফিনল্যান্ডের পয়েন্ট তিন ছিলো, রাশিয়ার পয়েন্টও তিন কিন্তু ডেনমার্কের পয়েন্ট শূন্য। হাতে আছে শেষ ম্যাচ। সামনে জয়ের সাথে গোল ব্যবধানের জটিল সমীকরণ আর গ্রুপের অন্য ম্যাচের ফলাফল। রাশিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপের তৃতীয় দল হিসেবে ব্রেথওয়েটরা পা রাখে শেষ ষোলোতে। এরপর ওয়েলসকে উড়িয়ে, আর আজ চেক প্রজাতন্ত্রকে বিদায় করে এখন সেমিফাইনালিস্ট! রূপকথা নয় তো কি?
ডেনিশদের হয়ে গোল করেছেন টমাস ডেলেনি ও ক্যাসপার ডলবার্গ। ম্যাচজয়ী সেই দুই গোলের নাম তো লেখা থাকবে ফুটবল ইতিহাসে। তবে সাথে আরেকটি নামও থাকবে। কোয়ার্টারে পরাজিত দলের পক্ষে একমাত্র গোল করা পাত্রিক শিকের! এই নিয়ে আসরে নিজের পঞ্চম গোল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে এখন পর্যন্ত আসরের যৌথ সর্বোচ্চ। তবে এই অর্জনের পরেও আক্ষেপের পরিমাণটা ভারী এই লেভারকুসেন স্ট্রাইকারের জন্য।
পাঁচ গোল করে চেকদের হয়ে ইউরোর এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ভাগাভাগি করলেন শিক। ২০০৪ ইউরোতে চেক প্রজাতন্ত্রের মিলান বারোসও ৫ বার বল জালে পাঠয়েছিলেন। তবে পূর্বসূরির সমান গোল করতে পারলেও, পূর্বসূরির মতো দলকে সেমিফাইনালে তুলতে পারলেন না এই স্ট্রাইকার। চেক প্রজাতন্ত্র বিদায় নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই।
আক্রমণ-প্রতিয়াক্রমণ থাকলেও ম্যাচের শুরুতেই এদিন সেমিতে যাবার বার্তা দেয় ডেনমার্ক। চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে এগিয়ে যেতে সময় লাগেনি খুব বেশি। রাইট উইংব্যাক ইয়েন্স স্ট্রিগার লারসেনের কর্নারে মাথা ঠেকিয়ে ৫ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মিডফিল্ডার টমাস ডেলেনি।
এই ব্যবধাম দ্বিগুণ হয় ম্যাচের চল্লিশ মিনিট পার হবার পর। ৪২ মিনিটে দুর্দান্ত এক ক্রস বক্সে পাঠালেন লেফট উইংব্যাক মেহাল, সেই অ্যাসিস্টটাকে টুর্নামেন্টের সেরা অ্যাসিস্ট বলা হলেও ভুল বলা হবে না। স্ট্রাইকার ক্যাসপার ডলবার্গের শুধু পা ঠেকালেই হয়ে যেত, যে কাজটা তিনি বেশ ভালোভাবেই করেছেন। ব্রায়ান লাউড্রপ, হেনরিক লারসেন, জন ডাল টমাসন ও ফ্রাঙ্ক আরনেসেনের পাশাপাশি এখন ডেনমার্কের হয়ে ইউরোতে সর্বোচ্চ তিন গোল হয়ে গেল এই ডলবার্গেরও। রহিম স্টার্লিং এর সাথে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন তিনি।
প্রথমার্ধ শেষ হয় এই ব্যবধানেই। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় পিছিয়ে পরা চেকরা। ফলাফলটাও পায় হাতেনাতে। রাইটব্যাক ভ্লাদিমির কুফলের অ্যাসিস্ট থেকে দুর্দান্ত এক ভলিতে ব্যবধান কমান শিক। আসরের পঞ্চম গোল করে দলকে ম্যাচে ফেরান। তবে এই গোল যথেষ্ট ছিলোনা দলকে সেমিফাইনালে ওঠাতে। বারবার চেষ্টা করেও ড্যানিশ রক্ষণ ভেদ করে বল জালে জড়ানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ম্যাচে মোট ১৬ টি শট নিয়েছে শিকরা। চলতি টুর্নামেন্টে এটাই ছিল তাদের দলীয় সর্বোচ্চ। তবে ম্যাচশেষে ড্যানিশ রূপকথার সামনে এগুলো শুধুই পরাজিত দলের পরিসংখ্যান।
শেষ চারে ড্যানিশদের প্রতিপক্ষ হবে ইংল্যান্ড অথবা ইউক্রেন। অসুস্থ এরিকসেনের জন্য উৎসর্গ করা ড্যানিশদের এই যাত্রা ১৯৯২ কে ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট কিনা তা জানতে বাকি থাকবে দুই ম্যাচ। সেমিতে ইংল্যান্ড/ইউক্রেনকে হারালে বাকি শুধু ফাইনাল। সেই ফাইনালেই জানা যাবে সব। তবে ততক্ষণ পর্যন্ত সেই ৯২ হাতছানি দিয়ে ডাকছে ড্যানিসদের।
এএ
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//