অপরাধ
হাতিরঝিলে ভয়ঙ্কর নতুন মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুম’ জব্দ, গ্রেপ্তার ২
এলএসডি ও ডিএমটির পর এবার উদ্ধার করা হয়েছে নতুন মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুম’। এই মাদক সেবনের পর মানসিক রোগ- সাইকোসিস ছাড়াও অবিরাম হ্যালুসিনেশনের কারণ হতে পারে। এছাড়াও অনিদ্রা হয়, চোখ ফুলে যাওয়ার কারণও হতে পারে। এছাড়া এই মাদক সেবনকারীরা জীব-জন্তুর সঙ্গে কথা বলা শুরু করে। গাছ থেকে অক্সিজেন আসছে কি-না তা অনুভব করে। মাঝে মধ্যে নিজের কাছে অক্সিজেন পাচ্ছে না এমন অনুভব করলে গাছ জড়িয়ে ধরার মতো কাণ্ডও করে থাকে। এমনকি মাতৃগর্ভের স্মৃতিতেও চলে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আজ বুধবার (৭ জুলাই) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) রাতে র্যাব সদরদফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০-এর একটি বিশেষ দল রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে মাদক চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুমে’র ৫টি বারে ১২০টি স্লাইস এবং দুই বোতল বিদেশি মদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: নাগিব হাসান অর্ণব (২৫), ও তাইফুর রশিদ জাহিদ (২৩)।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ম্যাজিক মাশরুম যদি কেউ ৫ থেকে ১০ মিলিগ্রাম সেবন করে তাহলে হ্যালুসিনেশন শুরু হয় এবং এর প্রতিক্রিয়া ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকে। এছাড়া এই মাদক সেবনকারীরা জীব-জন্তুর সঙ্গেও কথা বলা শুরু করে। কখনো কখনো অক্সিজেনের জন্য গাছ জড়িয়ে ধরার মতো কাণ্ডও করে। এই মাদক মূলত উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণেরা সেবন করে থাকে।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ‘ম্যাজিক মাশরুম একটি সাইকেলেডিক (হ্যালোসিনোজেন) ড্রাগ। এই ড্রাগটি বিভিন্ন খাবারে- কেক ও চকলেট মিক্স অবস্থায় সেবন করা হয়। এছাড়াও পাউডার ক্যাপসুল হিসেবেও পাওয়া যায়। এই ড্রাগ ব্যবহারে সেবনকারীর নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এমনকি কেউ কেউ ছাদ থেকে ঝাঁপিয়েও পড়তে পারে। ম্যাজিক মাশরুম সেবনে শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে মানসিক রোগ- সাইকোসিস ছাড়াও অবিরাম হ্যালুসিনেশনের কারণ হতে পারে। এই ধরনের অপ্রচলিত ড্রাগের চাহিদা তৈরি হয় মাদক সেবীদের নতুনত্বের প্রতি আগ্রহের মাধ্যমে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার তাইফুর রশিদ জাহিন প্রথমে গাঁজা ও মদ্যপানে আসক্ত ছিল। এরপর সে ২০১৯ সালে ক্রমান্বয়ে এলএসডি, ডিএমটিসহ বিভিন্ন ধরনের সাইকেডেলিক ড্রাগ নিয়মিত সেবন ও বিক্রি করা শুরু করে। সাইকেডেলিক ড্রাগ সম্পর্কে তার আগ্রহ সৃষ্টি হলে ইন্টারনেট থেকে সেই সাইকেডেলিক ড্রাগের উপরে অনুসন্ধান শুরু করে। এভাবে সে ম্যাজিক মাশরুম সম্পর্কে অনলাইনে জানতে পারে।’
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘তাইফুর রশিদ জাহিন প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ জন্মানো বিভিন্ন মাশরুমের মধ্যে সাইকেডেলিক বা ম্যাজিক মাশরুম আছে কি-না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে সে ব্যর্থ হওয়ার পর, ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ করতে শুরু করে। ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ পাওয়ার পর সে বিদেশে অবস্থানরত তার বন্ধু ও পরিচিতদের ম্যাজিক মাশরুম বাংলাদেশে নিয়ে আসার অনুরোধ জানায়।;
এই কমান্ডার বলেন, কানাডায় অবস্থানরত তার বাল্যবন্ধু গ্রেফতার নাগিব হাসান অর্ণব অধিক মুনাফা লাভের আশায় তাইফুর রশিদ জাহিনের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। তাইফুর ম্যাজিক মাশরুমের বারগুলো বাংলাদেশে বিক্রির ব্যবস্থা করে। গত মে মাসে নাগিব ম্যাজিক মাশরুমের একটি চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাইফুর ও নাগিব এই ম্যাজিক বারগুলি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। অত্যন্ত বিপদজনক এই ম্যাজিক মাশরুম সেবন করে তাইফুর নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং অত্যন্ত বীভৎসভাবে নিজেই নিজের হাতের বিভিন্ন অংশ ধারালো বস্তু দিয়ে কেটে ফেলে।
নাগিব হাসান অর্ণব বাংলাদেশে এসএসসি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে। এ সময় তাইফুর রশিদ জাহিদ তার সহপাঠী ছিল। অর্ণব পরবর্তীতে ২০১৪ সালে কানাডায় চলে যায়। কানাডায় একটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন শেষে সেখানে চাকরি করছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে নাগিব হাসান অর্ণব জানান, তাইফুরের সঙ্গে যোগসাজশে কানাডা থেকে তিনি ৩০টির মতো ম্যাজিক মাশরুম কিনে আনেন। এগুলো বাংলাদেশে চড়া মূল্যে বিক্রি করেন।
শেখ সোহান
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ