ফুটবল
আজ মেসির সব পাওয়ার দিন
কতটা পথ পেরোলে তবে পথিক বলা যায়? লিওনেল মেসির জন্য এই পথের দুরত্ব ১৬ বছর! টানা ৪ ফাইনাল হারের পর পঞ্চমবারে মুক্তি। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোল-এসিস্টের যোগান দিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শিরোপা জয়। সাথে নিজ দেশের ২৮ বছরের শিরোপা খরা দূর করা- মেসির আলো ঝলমলে ক্যারিয়ারে এই ম্যাচটা যেন ক্যানভাসে আঁকা কোন ছবিতে শিল্পীর তুলির শেষ আঁচড়।
এ রাত কেমন করে ভুলবেন লিওনেল মেসি? কি করে ভুলবে আর্জেন্টিনা? ১-২ বছর নয়, দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান। ১৯৯৩ এ যে ট্রফি দিয়ে শেষ হয়েছিলো শিরোপা উৎসব, সেই কোপা আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করে প্রায় তিন দশকের আক্ষেপ মেটালো মারাদোনার দেশ।
আর মেসি? জাতীয় দলের জার্সিতে সাত জনমের আরাধ্য একটা শিরোপা অবশেষে ছুঁয়ে দেখলেন এলএমটেন। জার্মানির কাছে বিশ্বকাপ ফাইনাল হেরে যে মারাকানায় করেছিলেন শোকের মাতম, সেই ঐতিহাসিক মঞ্চেই উঁচিয়ে ধরলেন কোপা আমেরিকা শ্রেষ্ঠত্ব। এই শিরোপা জাতীয় দলের হয়ে প্রথম শিরোপা, এই শিরোপা সর্বোচ্চ ৬ বারের ব্যালন জয়ী ফুটবলারের প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা।
এর আগে দেশের হয়ে একটি বিশ্বকাপ ও তিনটি কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলেছিলেন মেসি। প্রতিবারই ফিরেছিলেন শূন্য হাতে। এবার পেলেন মুঠো ভরে। ২০১৪ সালে জার্মানির বিপক্ষে যে মাঠে হেরেছিলেন বিশ্বকাপ ফাইনালে, আরাধ্যের বিশ্বকাপটা খুব কাছে থেকেও স্পর্শ করা হয়নি, সেই ঐতিহ্যবাহী মারাকানা স্টেডিয়ামে জিতলেন দেশের হয়ে প্রথম শিরোপা। দলকে তো জেতালেনই, নিজে জিতলেন সেরা খেলোয়াড়-সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরষ্কার। ৩৪-এ পা দেয়া মেসির জন্য চলতি কোপার আসরটা কতটা গুরত্বপূর্ণ ছিলো তার প্রমাণ এখানেই।
দেশের মাটিতে কোপা আমেরিকায় হার ব্রাজিলের অচেনা। শেষ সেই কবে ১৯৭৫ সালে পেরুর বিপক্ষে হেরেছিল একটি ম্যাচ। ইতিহাস ছিল মেসিদের বিপক্ষে। ব্রাজিল থেকে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে ফিরতে পারেনি কেউ। আগের পাঁচবারই শিরোপা জিতেছে স্বাগতিকরা। সাম্প্রতিক পারফরমেন্সেও আন্ডারডগ আকাশি-নীল শিবির। তবে মঞ্চটা যখন ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলারের আক্ষেপ পূরণের, তখন পরিসংখ্যান-অতীত কেবলই সংখ্যা মাত্র।
মেসির আক্ষেপ দূর হলো। ক্লাবের হয়ে সর্বজয়ী এই ফুটবলার আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে দূর করলেন এতদিন বয়ে নিয়ে চলা বিশাল শূন্যতা। কিছুই না পাওয়ার শূন্যতা। দূর করলেন নিজের গায়ে লেগে থাকা কালিমাও। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে আর্জেন্টিনার হয়ে খেললেন সবটা উজাড় করে। রক্ত কিংবা ঘাম, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া- রোজারিওর বিষ্ময়বালক সমাপ্তি টানলেন অপেক্ষার। সমাপ্তি টানলেন আক্ষেপ-হতাশার।
এএ
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//