ফুটবল
পেনাল্টি মিস করায় বর্ণবাদের শিকার ৩ ইংলিশ ফুটবলার
ফাইনালে পেনাল্টি মিস করায় বর্ণবাদের শিকার তিন ফুটবলার মার্কাস রাশফোর্ড, জ্যাডোন সাঞ্চো ও বুকায়ো সাকা। ফাইনাল ব্যর্থতা ছাড়িয়ে এখন আলোচনায় ইংলিশ উগ্র সমর্থকদের বর্ণবাদী আচরণ। কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ও তাদের সতীর্থরা। তীব্র নিন্দা বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, প্রিন্স উইলিয়াম ও লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের। গ্যারি নেভিলসহ সাবেক ফুটবলাররা অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
৫৫ বছরের অপেক্ষা শেষ হলো না। পাগলপারা তাই ইংলিশ সমর্থকরা উগ্রতার চরমে। ওয়েম্বলিতে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেনি হুলিগান। ভেঙ্গে-চুরে স্টেডিয়ামে ঢুকেছে। ম্যাচ শেষে মারামারিও করেছে।
সমর্থনের নামে ইংলিশদের পাগলামি মেনে নেয়া গেলেও হেরে যাওয়ার পর তারা যা করলেন তা ক্ষমার অযোগ্য। স্টেডিয়ামের বাইরে তাদের আক্রমণের শিকার কৃষ্ণাঙ্গরা। শারীরিক লাঞ্ছনার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন বর্ণবাদ। উগ্র সমর্থকদের টার্গেট পেনাল্টি মিস করা তিন ফুটবলার মার্কাস রাশফোর্ড, জ্যাডন সাঞ্চো ও বুকায়ো সাকা। মুছে দেয়া হয়েছে রাশফোর্ডের ম্যুরালের রং।
তবে বর্ণবাদী এমন আক্রমণের প্রতিবাদও হচ্ছে চারদিকে। নিন্দা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী টুইট বার্তায় বলেছেন, বর্ণবাদীদের লজ্জিত হওয়া উচিত কারণ ফুটবলাররা সবাই দেশের নায়ক।
তবে জনসনের বিলম্বিত টুইটেরও সমালোচনা হচ্ছে। যে কোন পরিস্থিতিতে ফুটবলারদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ইংলিশ এফ এ। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। উগ্র সমর্থকদের শনাক্ত করে বিচারের আশ্বাস লন্ডন মেয়র সাদিক খানের।
সতীর্থদের বরাবরই পাশে পেয়েছেন রাশফোর্ড, সাঞ্চোরা। ফাইনাল শুরুর আগেও হাঁটু গেড়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন ইংলিশ ফুটবলাররা। ম্যাচ শেষে প্রেস কনফারেন্সেও পেনাল্টি মিস করা ফুটবলারদের পাশে দাঁড়ান ফাইনালের গোলদাতা লুক শ ও কোচ গ্যারেথ সাউথগেট।
প্রিন্স উইলিয়াম ট্যুইট বার্তায় লিখেছেন, তিনি সমর্থকদের কর্মকাণ্ডে অসুস্থ বোধ করছেন। ইংলিশ ফুটবলার গ্যারি নেভিল অভিযুক্তদের কঠিন শাস্তির পক্ষে।
টুর্নামেন্টে তিন গোল করা রাহিম স্টার্লিং অবশ্য সমালোচনার উর্ধ্বে। তবে কি খাররাপ খেললেই দায় শুধু কৃষ্ণাঙ্গদের? একবিংশ শতকে ইংলিশদের বর্ণবৈষম্য নতুন করে ভাবাচ্ছে।
এস
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//