অর্থনীতি
বাংলাদেশ চীনের প্রতি কৃতজ্ঞ : বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ আরও চীনা বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে। বাংলাদেশ চীনের প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ব্যবধান অনেক বেশি। চীনে রফতানি বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বললেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
আজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তার নিজ দফতরে ঢাকায় নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও উইয়েনের সাথে মতবিনিময়ের তিনি এসব কথা বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, চীন বাংলাদেশের বৃহৎ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তথা মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে চীন অনেক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশ চীনের প্রতি কৃতজ্ঞ। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে। এর অনেকগুলোর কাজ এখন প্রায় শেষ। চীনসহ বিশ্বের অনেক দেশের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছেন।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের অবস্থান বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ ভালো। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা স্থাপন খুবই প্রয়োজন এবং এখানে বিনিয়োগ লাভজনক হবে। চীনের বিনিয়োগকারীদের নিয়ে উত্তরাঞ্চল পরিদর্শন করলে এ্যাগ্রো সেক্টরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা সহজ হবে। উত্তরাঞ্চলের সাথে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া, বাংলাদেশের, চামড়া, আইসিটি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে বিনিয়োগ খুবই সম্ভবনাময়। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইসিটি সেক্টরের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ সেক্টরে বিনিয়োগ চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বাংলাদেশ এ সেক্টর থেকে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির প্রস্তুতি নিয়েছে।’
এ সময়ে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও উইয়েন বলেন, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে চীন আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে চীন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এছাড়াও চীন বাংলাদেশের পাওয়ার প্ল্যান্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে প্রস্তত। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে চীন ৯৮ ভাগ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করেছে।
‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট করতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। বাংলাদেশে স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের বিষয়ে চীন খুবই আগ্রহী।’
আগামী নভেম্বরে চীনের সাংহাইতে অনুষ্ঠেয় চায়না ইমপোর্ট ফেয়ারে বাণিজ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, মার্চে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ সামিটে চীন গুরুত্ব দিয়ে অংশগ্রহণ করবে। আগামীতে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ আরও বাড়বে।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন