অর্থনীতি
কৃষকের কাছে ভালো মানের বীজ সরবরাহ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ বিপর্যয়। অন্যদিকে দেশের ক্রমহ্রাসমান জমি হতে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কৃষির একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৃষকের নিকট ভালো মানের বীজ সরবরাহ। এবং কৃষির নতুন নতুন কৌশল প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের নিকট পৌঁছে দিতে হবে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামীকাল (১১ ফেব্রুয়ারি) ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ উপলক্ষে আজ শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ বিপর্যয়। অন্যদিকে, দেশের ক্রমহ্রাসমান জমি হতে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কৃষির একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। তাহলেই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সিড এসোসিয়েশন কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। এ উপলক্ষ্যে আমি বীজ শিল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করে দেশের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি ও কৃষকের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন এবং স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করতে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি কৃষি পেশার মর্যাদা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে কৃষি কর্মকর্তাদের মর্যাদা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কৃষি গবেষণা জোরদার করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পুনর্গঠন করেন। এছাড়া তিনি অন্যান্য ফসলের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ এবং উন্নয়ন বাজেটে কৃষিতে সর্বাধিক বরাদ্দসহ অনেক গণমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা কৃষি উন্নয়নে বীজকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেশে মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ‘রাষ্ট্রপতি কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করার পর এদেশের কৃষির অগ্রযাত্রা থেমে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিয়ে কৃষি প্রধান এ দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে কৃষিতে ভর্তুকি, প্রণোদনা প্রদান ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমাদের সরকার দেশের কৃষক ও কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নিরলস কাজ করছে।
তিনি বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের লাভের কথা বিবেচনা করে সরকার কয়েক দফা সারের দামসহ কৃষি উপকরণের দাম কমিয়েছে। সেচের জন্য ডিজেলে ভর্তুকি ও গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে চায়। এবারের সিড কংগ্রেস আমাদের এ ভিশন বাস্তবায়নে গতি সঞ্চার করবে বলে আমি মনে করি।
তিনি ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন